শিরোনাম
তিতাসে শাশুড়ী হত্যার ঘটনায় জামাতা গ্রেফতার রংপুর বিভাগে সাড়ে ১১ মাসে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ৯৯১০টি অভিযানে ৩০২৭ টি মামলা ৩১৫২ জন গ্রেপ্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ.লীগের ৯ নেতার পদত্যাগ সাংবাদিক নূরুল কবীরের বক্তব্যের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাল জামায়াত ভোটের গাড়ি ‘সুপার ক‍্যারাভানের’ যাত্রা শুরু সৎ প্রার্থী বেছে চিন্তা-ভাবনা করে ভোট দিন: প্রধান উপদেষ্টা বিএনপিতে যোগ দিলেন জোটের আরেক নেতা অন্তর্বর্তী সরকার তার বৈধতা অনেক ক্ষেত্রেই হ্রাস করে ফেলেছে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য তারেক রহমানের আগমন, দেশের রাজনৈতিক আকাশে আগাম বসন্তের হিল্লোল লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি এক যুবক আহত

রংপুর বিভাগে সাড়ে ১১ মাসে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ৯৯১০টি অভিযানে ৩০২৭ টি মামলা ৩১৫২ জন গ্রেপ্তার

Chif Editor

শিল্পী আক্তার, রংপুর ব্যুরো :-  সাড়ে ১১ মাসে ৯ হাজার ৯১০টি অভিযান পরিচালনায় ৩ হাজার ২৭টি মামলা, ৩ হাজার ১৫২ জন মাদকসংশ্লিষ্ট আসামিকে গ্রেপ্তার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রংপুর বিভাগ।

মাদকবিরোধী অভিযানে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জনের দাবি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রংপুর বিভাগের। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত রংপুর বিভাগের আট জেলায় ধারাবাহিক ও সমন্বিত অভিযানের মাধ্যমে মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় সংস্থাটি।

এ সময় জুড়ে বিভাগজুড়ে মোট ৯ হাজার ৯১০টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে, যার মাধ্যমে দায়ের করা হয় ৩ হাজার ২৭টি মামলা। এসব মামলায় ৩ হাজার ১৫২ জন মাদকসংশ্লিষ্ট আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এসব অভিযানে উদ্ধার হওয়া মাদকের পরিমাণ রংপুর বিভাগে মাদক ব্যবসার বিস্তার ও ভয়াবহতার চিত্র স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে। উদ্ধারকৃত মাদকের মধ্যে রয়েছে প্রায় ১০ হাজার ৬০০ কেজি গাঁজা, সাড়ে চার হাজার বোতল ফেন্সিডিল, ৫০০ গ্রাম হেরোইন এবং সাড়ে পাঁচ হাজার পিস ইয়াবা। এর বাইরে বিভিন্ন ধরনের অন্যান্য অবৈধ মাদকদ্রব্যও জব্দ করা হয়েছে, যা দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চল হিসেবে রংপুর বিভাগকে মাদক চোরাচালানকারীদের

একটি গুরুত্বপূর্ণ রুট হিসেবে ব্যবহারের ইঙ্গিত দেয়।

অভিযানকালে মাদকদ্রব্যের পাশাপাশি মাদক বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত অর্থ ও যানবাহনও জব্দ করা হয়েছে। মাদক বিক্রির কাজে ব্যবহৃত ৮ লাখ টাকা নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া জব্দ করা হয়েছে ১৮টি মোটরসাইকেল, ৩টি মাইক্রোবাস, ৩টি সিএনজি অটোরিকশা, ১০টি ইজিবাইক এবং ৬৪টি মোবাইল ফোন। এসব যানবাহন ও যোগাযোগের সরঞ্জাম দীর্ঘদিন ধরে মাদক পরিবহন, লেনদেন ও কারবারিদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রংপুর বিভাগ কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মাসুদ হোসেন বলেন, রংপুর বিভাগের আটটি জেলায় প্রতিদিন নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য একটাই মাদক নির্মূল। এই লক্ষ্যে মাদক ব্যবসায়ী, পরিবহণকারী ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।

তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে অভিযান আরও জোরদার করা হবে।

তিনি বলেন, মাদক শুধু একটি অপরাধ নয়, এটি সমাজ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মারাত্মক হুমকি। বিশেষ করে তরুণ সমাজ মাদকের কারণে বিপথগামী হচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে পরিবার ও সামাজিক বন্ধন। সে কারণেই মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমও চালানো হচ্ছে।

নাগরিকরা বলছেন, পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি ও সামাজিক সংগঠনগুলোকেও এ ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে তরুণদের সচেতন করা এবং সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা বাড়ানো জরুরি বলে মত দেন তারা।

রংপুর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় রংপুর বিভাগে মাদক প্রবেশের ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি। ফলে এখানকার মাদকবিরোধী অভিযান শুধু আঞ্চলিক নয়, জাতীয় পর্যায়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কঠোর নজরদারি ও নিয়মিত অভিযানের মাধ্যমে এই সাফল্য ধরে রাখা গেলে ভবিষ্যতে একটি মাদকমুক্ত রংপুর গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

Leave a Reply