শিরোনাম
দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ চাই: মুহাম্মদ সাইদুর রহমান সাংবাদিক শভ্র’র দায়ের করা মামলায়,আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ”সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী হার্ড লাইনে ডুমুরিয়া চানপুরে ২০ কোটি টাকার সরকারি জমি দখল করে ভবন নির্মাণের কাজ চললেও প্রশাসন নীরব কুমিল্লা অন্ধকল্যান সমিতির ১৭ কোটি ২২ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা দুর্নীতির তদন্ত রিপোর্ট হিমাগারে জেসিআই ঢাকা প্রেস্টিজের ব্যতিক্রমধর্মী সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত ঘুষের টাকায় রাজউকের চাকরি বাগিয়ে নিয়েছেন কামরুজ্জামান | পর্ব-০১ পুকুর ভরাট নিয়ে নিরব ভূমিকায় কুমিল্লার বেয়াদপ প্রশাসন বরিশাল সরকারি মডেল কলেজ: ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু মামুনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ইসলামী আদর্শভিত্তিক নেতৃত্বই জাতিকে সঠিক গন্তব্যে নিতে পারে: -মাওঃ আঃ জব্বার বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা জরুরী : -মাওলানা আঃ জব্বার

তুচ্ছতায় অশান্ত পাহাড়ে একক কর্তৃত্বধর নেতার ভয়ংকর প্রদর্শনী!

বিশেষ প্রতিনিধি: খাগড়াছড়িসহ গোটা পার্বত্য চট্টগ্রাম হঠাত কেন অশান্ত হলো? কেনই বা ঘটলো সংঘাত-সংঘর্ষ, রক্তপাতের ঘটনা? গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পট পরিবর্তনের পরও তো সেখানে জ্বালাও, পোড়াও, খুন-খারাবির ঘটনা ঘটেনি। চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে মারার মতো বিচ্ছিন্ন ঘটনার জের ধরে গোটা পার্বত্য চট্টগ্রামে তো সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার কথা নয়। এ নিয়ে জাতিগত সংঘাত বিবাদ তো অনেক পরের কথা। অথচ কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভয়াল সব ঘটনার বিস্তৃতি ঘটে গেল পাহাড়ে পাহাড়ে।

পার্বত্য জনপদে বারো রঙের নিরাপত্তা বাহিনী আর মাকড়শার জালের মতো ছড়িয়ে থাকা বিশাল গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক কেন এই সাধারণ বিষয়টির অতি সাধারণ তথ্য উদঘাটনে ব্যর্থ হলেন? বরং তারা তুচ্ছ ঘটনাটির পেছনে ‘বহিঃশত্রুর বহুমুখী চক্রান্ত’ আবিস্কারের ব্যাপারেই যেন বেশি উৎসাহ দেখাচ্ছেন। রীতিমত স্বপ্নে পাওয়া তাবিজ কবজের মতো ‘অতিগোপনীয় গোয়েন্দা তথ্য’কে মজবুত ভিত্তি দেওয়ার কর্মকান্ডও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। যেমন, খাগড়াছড়ি-রাঙামাটিতে জাতিগত সংঘাতে হতাহতের ঘটনা চলাকালে ঘটা করেই বান্দরবান থেকে আবিস্কৃত হলো যুদ্ধ সরঞ্জাম।

রুমার দুর্গম সীমান্তবর্তী দোপানিছড়া সংলগ্ন গহীন জঙ্গলে গড়ে ওঠা পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের কথিত আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিজিবি পেয়ে গেল অস্ত্র-গোলাবারুদ, ড্রোন ও সিগন্যাল জ্যামারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। অজ্ঞাত সূত্রে খবর পেয়ে এসব যুদ্ধ সরঞ্জাম উদ্ধারের কথা জানালেন রুমা ব্যাটালিয়ান (৯ বিজিবি)র অধিনায়ক লে. কর্নেল হাসিবুল হক, পিপিএম, পিএসসি।

এরমধ্যেই গুজববাজরা ছড়িয়ে দিচ্ছে ভয়ংকর ভয়ংকর তথ্য। কেউ বলছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সশস্ত্র বিদ্রোহীরা দলে দলে অনুপ্রবেশ করছে পাহাড়ে। কেউবা বলছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তত্বাবধানে পাহাড়ে আরো বড় ধরনের কিছু ঘটানোর ষড়যন্ত্র চলছে। এদের পাশাপাশি খোদ আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) যা জানালো তাতে শান্তি, স্বস্তি সবই যেন উ’বে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আইএসপিআর এর প্রেসরিলিজে বলা হলো, “চলমান উত্তেজনা তিন পার্বত্য জেলায় ভয়াবহ দাঙ্গায় রূপ নিতে পারে, এ কারণে সবাইকে সতর্ক করাসহ সেখানে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানানো হচ্ছে।”

অথচ খাগড়াছড়িতে রাজনীতির সাথে সংযুক্তহীন, সাধারণ আমজনতা যেসব কথা জানাচ্ছেন, যে অভিব্যক্তি প্রকাশ করছেন- তারমধ্যেই প্রকাশ পাচ্ছে হঠাত পাহাড়কে অশান্ত করার সাদামাটা তথ্য রহস্য। তারা জানাচ্ছেন, আওয়ামীলীগ নেতা কর্মিরা পালিয়ে যাওয়ার পর পরই গোটা জেলাটি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের একক কতৃত্বধারী এক নেতার নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। তিনি ঢাকায় অবস্থানকালেই সহযোগিদের মাধ্যমে দখলবাজি, চাঁদাবাজি, খবরদারিত্বসহ সবকিছু হাতিয়ে নিয়েই খাগড়াছড়িতে পা রাখেন।

ওই নেতাকে ঘিরে তারই আশীর্বাদের ছায়াতলে জড়ো হতে থাকে পাহাড়িদের ভয়ংকর অস্ত্রবাজ বাহিনী ইউপিডিএফ। ওই সংগঠনের দুর্ধর্ষ ক্যাডাররা বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্রসহ তাদের জঙ্গল মহলের আস্তানা ছেড়ে দলে দলে দীঘিনালা, পানছড়ি উপজেলা সদরসহ খাগড়াছড়ি জেলা শহরেও হাজির হতে থাকেন। সশস্ত্র গ্রুপগুলোর আনাগোনা, অবাধ বিচরণ দেখে শুনে কয়েকদিন ধরেই বাসিন্দারা অজানা আশংকায় তটস্থ হয়ে উঠেন।

এ কারণে ব্যবসায়িসহ সাধারণ মানুষজন অনেকেই কয়েকদিন আগে থেকেই বিপদ এড়াতে খাগড়াছড়ি ছাড়তে থাকেন। তাদের অনেকেই চট্টগ্রাম, ফেনী কিংবা ঢাকায় সাময়িক ভাবে নিরাপদ আশ্রয় নেন বলেও খবর পাওয়া গেছে। সেখানে মূলত একক কর্তৃত্বধারী, বেশুমার দাপুটে নেতার আঙ্গুলী হেলনে তারই লালিত অস্ত্রবাজ পাহাড়ি গ্রুপগুলো ঠান্ডা মাথায় ভয়াল জাতিগত বিরোধ, সংঘাত ও রক্তপাতের সূচণা ঘটিয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন। কারণ, নেতা ঢাকা থেকে যেদিন খাগড়াছড়ি এসেছেন-তার পরদিনই কিন্তু জ্বালাও পোড়াও ঘটে। তিনি বিশেষ রাজনৈতিক এজেন্ডার অংশ হিসেবে অন্তবর্তী সরকারকে চাপে রাখার কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে খাগড়াছড়ি গেছেন কি না- তা কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি এখনও।

Leave a Reply