স্টাফ রিপোর্টার:
রাজনীতি মানুষের জীবনের গতিপথ বদলে দেয়—সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ঝাঐল দক্ষিণ পাড়া গ্রামের মৃত. হেলাল উদ্দীনের ছেলে জাকির খানের গ্রেফতার যেন সেই পরিবর্তনেরই উদাহরণ। ১০ই আগস্ট (রবিবার) সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কড্ডার মোড় এলাকা থেকে এই সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত ৪ আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নাশকতার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা করার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় জাকিরকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। পরে তাকে সদর থানা থেকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোখলেছুর রহমান বলেন, “কড্ডার মোড় এলাকা থেকে জাকির খানকে প্রথমে আটক করা হয়, পরে তাকে বৈষম্যবিরোধী মামলায় গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জাকির খান একসময় নিষিদ্ধ ঘোষণার আগে ছাত্রলীগের সক্রিয় নেতা ছিলেন। তবে রাজনৈতিক পালাবদলে তিনি দল পরিবর্তন করে বর্তমানে বিএনপির অঙ্গসংগঠন ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী জিয়ার সৈনিক দল’-এর সভাপতি হয়েছেন। অনেকে মনে করেন, তার এই পদোন্নতির পেছনে রাজনৈতিক কৌশল ও ব্যক্তিগত ক্ষমতার প্রভাব রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন জানান, জাকিরের বিরুদ্ধে কড্ডা ও ঝাঐল এলাকায় ছোট ছোট ছিনতাই ও ডাকাতির মতো ঘটনারও অভিযোগ রয়েছে। তবে এসব বিষয়ে পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগের বহু নেতা-কর্মী রাতারাতি দল বদল করেছেন। কেউ বিএনপিতে, কেউ তার অঙ্গসংগঠনে ঠাঁই নিয়েছেন। সম্প্রতি অনলাইন ভিডিও নিউজ পোর্টালে দেয়া সাক্ষাৎকারে বিএনপির এক প্রবীণ নেতা অভিযোগ করেন, শুধু সিরাজগঞ্জ নয়, দেশের বিভিন্ন জেলায় ‘পকেট সমিতি’ গড়ে পদ বাণিজ্য চলছে এবং রাজনীতির নামে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করা হচ্ছে।
জাকির খানের পরিবারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, এই ঘটনা কেবল একটি নাশকতার মামলার বিষয় নয়—এটি সিরাজগঞ্জের রাজনৈতিক রূপান্তর, দলীয় দখলদারি এবং ক্ষমতার খেলায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা।