নিজস্ব প্রতিবেদক।। বিচারবিহীন দেশে হত্যারও এখন একটা প্রোমোশন ভ্যালু আছে,প্রমাণ দিয়েছেন কাউনিয়া হাউজিং এলাকার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা শাহীন সরদার ওরফে “সোনা শাহীন”।প্রকাশ্যে যুবদল নেতা সুরুজ গাজীকে রাস্তায় ফেলে কুপিয়ে হত্যা করার পর, চার মাস জেলে ঘুরে এসে এখন তিনি জামিনে স্বাধীন।আর আশ্চর্যের ব্যাপার,তিনি এখন আবারো এলাকাজুড়ে চাঁদাবাজি, হুমকি আর রামদার রাজনীতি চর্চায় ব্যস্ত।
হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার পরও, আদালতের কল্যাণে একে একে জামিনে বেরিয়ে আসে শাহীন, তার স্ত্রী শাবানা, দুই পুত্র লিয়ন ও ইমরান। যেন তারা কোনো পুরস্কার পেয়েছেন,সাজা নয়!
এখন তারা বাদী পরিবারকেই উল্টো হুমকি দিচ্ছেন,সাক্ষী দিলে সুরুজের মতো পরিণতি হবে। আশেপাশের মানুষগুলো নাকি এখন দিনরাত আতঙ্কে থাকে। কেউ বলে, “রাতে শাহিনের ছেলেরা ঘোরে, আবার পুলিশের গাড়িও দেখা যায়।বোধহয় সিকিউরিটি টিম!
বিচার? সেটা কিসে খাওয়া যায়?
মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম অবশ্য নির্ভেজাল আমলাতান্ত্রিক উত্তর দিয়েছেন,আসামী জামিন আদালতের ব্যাপার, আমরা কিছু করতে পারবো না।”
অর্থাৎ, হত্যাকারী যদি আদালতের করুণা পায়, পুলিশ তখন নীতিগতভাবে চোখ বন্ধ করে ঘুমায়।জনগণ মরুক বা পালাক, আইন ঘুমাচ্ছে না,সে কেবল “দায়মুক্তির” ঘুমে।
রাজনীতি যখন রামদার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র..
ঘটনার শুরুটা ছিল দলের অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার দ্বন্দ্ব। যুবদল বনাম স্বেচ্ছাসেবকদল,একই দলের ভেতরে এখন রামদা বনাম রামদা প্রতিযোগিতা। সুরুজ গাজী ছিলেন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি চাঁদাবাজি আর স্বর্ণ প্রতারণায় বাধা দিয়েছিলেন। সেটাই তাঁর অপরাধ। ফলে সোনা শাহীন, তার স্ত্রী শাবানা, আর দুই ছেলে মিলেই সুরুজকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে দেয়।এ যেন পরিবারের একতা পারিবারিক ব্যবসা” বললেও ভুল হয় না।
হত্যার পরেও আগুনে দগ্ধ ন্যায়বিচার..
সুরুজকে হত্যার পর ক্ষুব্ধ জনতা শাহিনের বাড়িতে আগুন দেয়। কিন্তু পরিহাস হচ্ছে, আগুন দেওয়ার দায়ও চাপানো হয় নিহতের ভাই ও সাক্ষীদের ওপর! অর্থাৎ খুনি মুক্ত, সাক্ষী অভিযুক্ত।এ যেন বাংলাদেশের ক্লাসিক ফর্মুলা,যে মরে, তারই দোষ।
শেষ কথা, জামিনে ঘুরে বেড়ানো রক্ত,
এই দেশে এখন জামিনই হলো সর্বশেষ বিজয়মালা। হত্যার দায়, অস্ত্রের রামদা, আর আতঙ্কের রাজনীতি,সব মিলে শাহিন গ্যাং এখন অপরাধের আধুনিক ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর।আইন দেখছে, প্রশাসন শুনছে, রাজনীতি চুপ। কেউ হয়তো আবার বলবে,দেখুন, দেশে আইনের শাসন আছে।”হ্যাঁ, আছে, শুধু সেটা এখন হত্যাকারীর পক্ষে, ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে।