সিনিয়র রিপোর্টার জুয়েল খন্দকার :- সম্প্রতি ০৩ আগস্ট ২০২৪ইং তারিখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জুলাই বিপ্লবের বিরুদ্ধে স্বৈরাচার সরকার আওয়ামিলীগকে টিকিয়ে রাখতে কুমিল্লার সাবেক এমপি খুনী হাজী আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহারের সাথে শান্তি মিছিলে অংশগ্রহণ করে এড. তাইফুর আলম। উক্ত শান্তি মিছিলের ছবি ও ভিডিও ফুটেজে এড. তাইফুর আলমকে এমপি বাহারের সাথে শান্তি মিছিলের প্রথম শাড়িতে কুমিল্লা নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিপাড় দেখা যায়। ৫ আগস্ট ২০২৪ স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার দেশ ছেড়ে ইন্ডিয়াতে পালানোর আগে ৩ আগস্টে এমপি বাহারের দোসর এড. তাইফুর আলম শান্তি মিছিল করেও টিকিয়ে রাখতে পারেনি স্বৈরাচার সরকার হাসিনা ও এমপি বাহারকে।
এড. তাইফুর আলম কুমিল্লা জেলা বুড়িচং উপজেলার বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ছিলেন। কিন্তু তিনি অর্থ ও ক্ষমতার লোভে সাবেক স্বৈরাচার এমপি হাজী আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহারের দোসর হিসেবে বিগত ১৭ বছর কাজ করেন। এমপি বাহারসহ তার মেয়ে সাবেক সিটি মেয়র তাহসিন বাহার সূচনা, বাহারের স্ত্রী মেহেরুন নেসা বাহার ও মহিলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ফাহমিদা জেবিনের সাথে পরিবারিক সখ্যতাও গড়ে তুলেন। তাদেরকে নিয়ে দখল করেন কুমিল্লা জেলার আলেখার চরের জাতীয় অন্ধকল্যান সমিতি ও চক্ষু হাসপাতাল, প্রায় ১০ বছর সভাপতি পদ দখল করে আছেন এবং এ-পদটিতে এখনো তিনি বহাল আছন, যা সম্ভব হয়েছে এমপি বাহারের আশীর্বাদে।
দানব খ্যাত বাহারের সাথে পারিবারিক ভাবে সু-সম্পর্ক গড়ে তোলার পর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি তাইফুরের।কুমিল্লার জাতীয় অন্ধকল্যান সমিতি ও চক্ষু হাসপাতালের কোটি কোটি টাকা লুটপাট করা সহ স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের প্রধান হাসিনা ও এমপি বাহার, বাহারের মেয়ে সূচিকে টিকিয়ে রাখতে নিজেসহ কর্মীদের নিয়ে মিছিল মিটিংয়ে প্রায়ই অংশগ্রহণ করতেন এড. তাইফুর। সাবেক মেয়র তাহসিন বাহার সূচির নির্বাচনে সরাসরি অন্ধকল্যান সমিতি ও চক্ষু হাসপাতালের স্টাফদেরকে নিয়ে মিটিং করে ভোট চাওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তাইফুরের বিরুদ্ধে। ২৪ এর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে এড. তাইফুর আলম এর বিরুদ্ধে রয়েছে শান্তি মিছিলে নিজে সরাসরি দলবল সহ অংশগ্রহণের অভিযোগ । কিন্তু সারা দেশে ১৫০০ হত্যাসহ জ্বালাও পোড়াও এর অসংখ্য মামলা দায়ের হলেও কুমিল্লা থেকে এড. তাইফুরের বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের হয়নি। জুলাই বিপ্লবকে নস্যাৎ করার চেষ্টাকারী লোকটি এখন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে পদ পাওয়া নিয়ে বিএনপির কোর খাওয়া নেতাদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। জুলাই বিপ্লবের সরাসরি বিরোধীকারী যখন বিএনপির পদ পায় তখন আওয়ামী ফেসিষ্টের চেহারায় বিএনপির মত বিশাল দলেও ফেসিষ্টের মুখ দেখা যায়, এ যেন নেতা শূন্যতায় ভোগছে বিএনপি। বাঘা বাঘা নেতাদেরকে ঘর বৈঠা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ নেতা কর্মীদের মাঝে।
একটি সূত্র বলছে আওয়ামিলীগ পতনের পর এমপি বাহারের নেতা কর্মীদেরকে বিভিন্ন মামলা থেকে বাঁচাতে তাইফুর আলম নিজে সহ বিভিন্ন উকিলদেরকে দিয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মামলা তদবিরের মত কর্মকাণ্ড করছেন এবং এই কাজ করছে কুমিল্লা দক্ষিন জেলার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পদের প্রভাব খাটিয়ে।এমনকি হাইকোর্ট পর্যন্ত আওয়ামী দোসরদেরকে বাঁচানোর জন্য দৌড় ঝাঁপের অভিযোগ উঠেছে এড. তাইফুর আলমের বিরুদ্ধে। পুলিশের সূত্র বলছেন কুমিল্লা জেলায় পতিত আওয়ামিলীগ ও এমপি বাহারকে ফেরাতে বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় আর্থিক যোগান দেওয়া হচ্ছে নাশকতা সৃষ্টি করার জন্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্রে জানা যায় তাইফুর আলম আওয়ামী হাসিনা ও এমপি বাহার, সাবেক মেয়র তাহসিন বাহার সূচিকে ফিরাতে এবং ইউনূস সরকারকে বিতর্কিত করতে বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় আর্থিক যোগান দিচ্ছেন। জুলাই বিপ্লবীদের রক্তের সাথে বেঈমানী করছেন বলেও এমন অভিযোগ বিভিন্ন দলীয় নেতা কর্মীদের। ত্যাগীদেরকে স্থান না দিয়ে আওয়ামী এমপি বাহারের দোসর তাইফুর আলমকে স্থান দিয়েছেন কিভাবে দলে এমন প্রশ্ন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মাঝে।
এড. তাইফুর আলম ৩ আগস্ট ২০২৪ শান্তি মিছিলে এমপি বাহারের সাথে ব্যানার নিয়ে সামনের সাড়িতে অংশগ্রহণ এর বিষয়ে জানতে এড. আ.হ.ম তাইফুর আলমকে ফোন দিলে তাকে প্রশ্ন করার আগেই তিনি উত্তরে বলেন ছবিটি আমি না, তবে দেখতে আমার মতো। ছবিটি এআই কিংবা ইডিট করা কিনা প্রশ্নের জবাবে কোন উত্তর মিলেনি তাঁর কাছ থেকে। ছবিটি এআই সাইটে ফ্যাক্টচেকে যাচাই-বাছাই করে জানা যায় ছবিটি অর্জিনাল, ছবিটিতে কোন প্রকার এআই এর কাজ নেই। ভিডিও ফুটেজের সাথেও মিল রয়েছে ছবিটির। এড. তাইফুর আলম এর উক্ত ছবিটিকে নিয়ে আমাদের টিম গত ৩ মাস যাবৎ যাচাই-বাছাইয়ের জন্য কাজ করেন। যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায় ৩ আগস্ট ২০২৪ কুমিল্লা নগরীর কান্দিপাড়ে শান্তি মিছিলে অংশগ্রহণ করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ মিছিলে অংশগ্রহনকারী বেশ কয়েকজন আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের জিজ্ঞাসা করলে তারাও নিজেদের ছবি দেখিয়ে সত্যতা স্বীকার পূর্বক বলেন আমিও ছিলাম এই মিছলে আমাদের সাথে এমপি বাহার সহ প্রথম সাড়িতে এড. তাইফুর আলম ছিলেন এবং এই তাইফুর আলমের এই মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বলে চেলেঞ্জও করেন। তাইফুর আলম এখন বড় বিএনপি হয়েছেন! ১৭ বছর এমপি বাহারের পা চেটেও বিএনপির বড় নেতা হওয়া ও দলে বহাল থাকা যায় এটাও একটা এমপি বাহারের ক্রেডিট বলে মনে করি।


