সম্প্রতি গত ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে ফেইসবুকসহ বিভিন্ন গনমাধ্যমে জসিম নামক একজন বাংলাদেশী নাগরিককে মিয়ানমারের ইয়াবা ডিলার কর্তৃক নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়। উক্ত ভাইরাল ভিডিওতে কথিত জসিম নিজেই জানায় টেকনাফ হাজম পাড়ার সালেহ আহমদের ছেলে জকির নামক ইয়াবা ব্যবসায়ী তাকে মায়ানমারের ইয়াবা ডিলারের নিকট বন্ধক রেখে ২৫,০০,০০০/- (পঁচিশ লক্ষ) টাকার ইয়াবা নিয়ে আসে। উক্ত ইয়াবার টাকা পরিশোধ না করায় মায়ানমারের ইয়াবা ডিলারগণ কথিত জসিমকে শারীরিক নির্যাতন করে। ভিডিও প্রকাশের পরেই সংশ্লিষ্ট মাদক ব্যবসায়ীরা আত্মগোপনে চলে যায়। বর্ণিত ঘটনা বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হলে বিষয়টি র্যাবের দৃষ্টিগোচরে আসে এবং র্যাব-১৫, কক্সবাজার সংশ্লিষ্ট ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ও প্রকাশিত ব্যক্তিদের চিহিৃতসহ জড়িত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে টেকনাফ, উখিয়া ও মায়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধিসহ র্যাবের আভিযানিক দল অভিযান অব্যাহত রাখে।
গত ১৬ মে ২০২৩ খ্রিঃ র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর সিপিএসসি এর আভিযানিক দল বিশ্বস্থ সূত্রে অবগত হয়, বর্নিত ঘটনার ধারাবাহিকতায় টেকনাফের ইয়াবা গডফাদার জকিরসহ কতিপয় ইয়াবা ব্যবসায়ী মায়ানমার হতে ইয়াবা সংগ্রহ করে সাগর পথে মহেশখালী হয়ে বোট যোগে কক্সবাজার চৌফদন্ডী ঘাট হয়ে ঈদগাঁও এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে আসছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৬ মে ২০২৩ খ্রিঃ অুনমান ২০.০০ ঘটিকার সময় র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর সিপিএসসি এর একটি চৌকস আভিযানিক দল কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও থানাধীন ঈদগাঁও ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের আল মাছিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার মসজিদের সামনের পুকুরের পশ্চিম-উত্তর কর্ণারে পাকা রাস্তার উপর উপস্থিত হয়ে চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশী অভিযান পরিচালনার একপর্যায়ে অজ্ঞাতনামা সিএনজি থেকে নেমে দুইজন ব্যক্তি কৌশলে পালানোর চেষ্টাকালে র্যাবের আভিযানিক দল কর্তৃক ধৃত হয়। উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত ব্যক্তিদ্বয়ের দেহ ও বাজারের ব্যাগ তল্লাশী করে তাদের হেফাজত হতে সর্বমোট ৪০,০০০ (চল্লিশ হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
আটককৃত ব্যক্তিদ্বয়ের বিস্তারিত পরিচয় ১। মোঃ জাকির আহমেদ প্রঃ জকির (৩৯), পিতা-মৃত-সালেহ আহমদ, সাং-হাজমপাড়া, কচুবনিয়ারছড়া, ০৭নং ওয়ার্ড, ২। মোঃ ইসমাইল (৩৫), পিতা-নুরুল বসর, মাতা-মাহমুদা খাতুন, সাং-হাজমপাড়া, ০৭নং ওয়ার্ড, উভয়থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার এবং তাদের অপর এক সহযোগী র্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে কৌশলে দ্রুত পালিয়ে যায় মর্মে ধৃত আসামীদ্বয়ের নিকট থেকে জানা যায়। জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী জকির জানায় যে, সে টেকনাফ ও উখিয়া থানা এলাকার ইয়াবা গডফাদার এবং তার সহযোগীদের সহায়তায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লোককে সীমান্তবর্তী মায়ানমার এলাকায় বন্ধক রেখে ইয়াবার বড় বড় চালান নিয়ে আসে। আরো জানায় যে, ফেইসবুক, গনমাধ্যমসহ বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত আলোচিত ঘটনায় সে প্রত্যক্ষ্যভাবে জড়িত ছিল এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত জসিম তার পরিচিত লোককে মায়ানমারে বন্ধক রেখে ২৫,০০,০০০ (পঁচিশ লক্ষ) টাকার ইয়াবা ট্যাবলেট সংগ্রহ করে। অদ্য উপরোল্লিখিত ইয়াবা ট্যাবলেটসহ র্যাব-১৫ এর আভিযানিক দলের কাছে ধৃত হয়।
প্রকাশ থাকে যে, সিডিএমএস যাচাই করে ধৃত আসামী (১) মোঃ জাকির আহমেদ প্রঃ জকির (৩৯) এর বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ের জড়িত থাকার অপরাধে কক্সবাজারের টেকনাফ থানাসহ ০৫টির অধিক মামলা রয়েছে।
উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যসহ বর্ণিত ঘটনার সাথে জড়িত ধৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণার্থে কক্সবাজার জেলার সদর মডেল থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করা হয়েছে ।