সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ক্ষেপাটে প্রকৌশলী শাহাজাদা ফিরোজ কে তলব করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। এতেই চটে গিয়েছেন সড়কের বেপরোয়া শাহজাদা, বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিবেদককে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন অবিরত। যশোর থেকে ঢাকায় এসে নাকি প্রতিবেদককে দেখে নিবে এই সওজ এর প্রকৌশলী। মাত্র ৩৪ হাজার টাকা বেতনের এই প্রকৌশলীর দুর্নীতি অনিয়মের মাধ্যমে এতটাই অর্থ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন, যে গণমাধ্যমের কন্ঠস্বর টাকার জোরে চেপে ধরতে চান এই দাম্ভিক প্রকৌশলী। বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকা ও টেলিভিশনে প্রকৌশলী শাহজাদা ফিরোজের আয়েশী জীবনযাপন ও আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে ক্ষেপে গিয়ে সকল সাংবাদিককে দেখে নেবার হুমকি ধামকি ছাড়ছেন এই প্রকৌশলী, যা একাধিক সূত্র নিশ্চিত করে।
এ ব্যাপারে একাধিক সাংবাদিক সংগঠন জানায়, দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় যদি একজন প্রকৌশলী কোন সাংবাদিককে হেনস্থা করে, তাহলে ঐক্যবদ্ধভাবে এ দুর্নীতিবাজের সকল খুব কৌশল কে মোকাবেলা করা হবে।
গত রবিবার ৭ জুলাই বিষয়টি নিশ্চিত করেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর প্রশাসন। তারা দেশপত্র কে বলেন বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনে উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহজাদা ফিরোজের আয় বহির্ভূত সম্পদ সংবলিত সংবাদ প্রকাশের পর সড়ক সেতু ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব এ, বি, এম, আমিনউল্লাহ নূরীর নির্দেশে অভিযুক্ত প্রকৌশলী শাহজাদা ফিরোজকে সড়ক ভবনে লিখিত চিঠির মাধ্যমে তলব করা হয়। সওজ কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেন সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ভাবে প্রকৌশলী শাহজাদা ফিরোজের উপর আনিত সকল অভিযোগ তদন্ত করা হবে।
দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে প্রকৌশলী শাহজাদা ফিরোজের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ও প্রকাশিত সংবাদের আলোকে অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছে, সূত্রটি আরো জানায় প্রকৌশলী শাহজাদা ফিরোজ ও তার পরিবারের সকল সদস্যের ব্যাংক ব্যালেন্স, স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখবে দুদক। অভিযোগ অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে কোন ধরনের অনিয়মের সুযোগ নেই বলে আশ্বস্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃপক্ষ।
বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া অভিযোগে জানা যায় ঠিকাদারদের কাছ থেকে ৫ পার্সেন্ট কমিশন নেওয়া ও প্রকল্পে নিম্নমানের সামগ্রি ব্যবহার সহ অন্যান্য অনিয়মের মাধ্যমে প্রকৌশলী শাহাজাদা ফিরোজ ও তার পরিবারের আয়বহির্ভূত সম্পদ ও কোটি কোটি টাকার পাহাড় গেড়েছেন প্রকৌশলী শাহজাদা ফিরোজ । মাহবুব আলম নামে জনৈক এক ব্যক্তি শাহজাদা ফিরোজ ও তার স্ত্রী শামীমা নাছরীন এর নামে দুর্নীতি দমন কমিশনে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। প্রাপ্ত অভিযোগে জানা যায়, বাসা নং- সি ব্লকের ২ নং রোডের (ফ্ল্যাট নং- এ/৬), শাহ আলীবাগ, থানা মিরপুর, ঢাকায় বসবাস করছেন শাজাজাদা ফিরোজ। অতীতে মানিকগঞ্জে কর্তব্যরত অবস্থায় নির্বাহী প্রকৌশলীর অনুগত হওয়ার কারণেই তাকে ব্যাপক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে দেখা যেতো। তৎকালীন সময় শাহজাদা ফিরোজের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঠিকাদারী টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের অভিযোগও রয়েছে। তিনি প্রতিটি ঠিকাদারদের কাছ থেকে নিয়মিত ৫% হারে এককভাবে অর্থ আদায় করেতেন বলে জানা যায়। তৎকালীন দুদকের অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায় যে, শাহজাদা ফিরোজ শাহ আলীবাগ ২৩ বাসার সি ব্লকে (ফ্ল্যাট নং এ/৬), থানা মিরপুর, ঢাকা ফ্ল্যাটটি ক্রয় করেছেন প্রায় ১ কোটি টাকা দিয়ে। ঢাকার গুলশান -২ এর এফ ব্লক, বাড়ী নং- ৬৪/২। উক্ত বাড়ীটির ৩য় তলায় ২৬০০ বর্গফুটের তার একটি ফ্ল্যাট রয়েছে তার স্ত্রীর নামে, তার ব্যক্তিগত ব্যবহারে রয়েছে জাপানী হোন্ডা কোম্পানির অর্ধকোটি টাকা মূল্যের একটি বিলাসবহুল গাড়ি (ঢাকা মেট্রো গ – ৩৭-৯৪-২৩)
রাজধানীর উত্তরা হাউজ বিল্ডিং এলাকায় সেক্টর নং- ১০, বাসা নং ৬৭, রোড ১১। উক্ত বাড়ীটি তার নিজের ১ টি ফ্ল্যাট রয়েছে সরেজমিন অনুসন্ধানে যার হদিস পাওয়া যায়।
কিন্তু বিভিন্ন সূত্রে আরও জানা যায় ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন সাভার মৌজায় তার নিজ নামে ৫০ কাঠা জমি রয়েছে। সেখানে একটি কারখানা প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আয়কর নথি মূলে বরিশাল মূল শহরে তার ১২০ শতাংশ জমি, তার স্ত্রী শামীমা নাছরীন এর নামে ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে ১টি ৭ম তলা বাড়ী রয়েছে। বাড়ীটিতে ১৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে; ঢাকার মোহাম্মদপুর বসিলা এলাকায় তার স্ত্রীর নামে কয়েক বিঘা জমি রয়েছে বলে সূত্রটি জানায়। আরও জানা যায় তার ও তার পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের নামে বেনামে বিভিন্ন জায়গায় সম্পদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। রয়েছে শেয়ার মার্কেটে নামে বেনামে অর্ধশত কোটি টাকার ইনভেস্টমেন্ট। এছাড়াও কয়েকটি ব্যাংকে অর্ধশত কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানায়। যার দুদকের অনুসন্ধানেই বেরিয়ে আসবে।
বোদ্দা জনেরা মনে করছেন প্রায় ৩৪ হাজার টাকা বেতন পেলেও সওজ এর একজন উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর কোটি কোটি টাকার গাড়ি বাড়ি ব্যাংক ব্যালেন্স গড়ে তোলা কিভাবে সম্ভব? সওজ এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহাজাদা ফিরোজ কে দুদকে ডেকে নিয়ে তলব করলে এবং তার ও তার পরিবারের ব্যাংক একাউন্ট, শেয়ার বাজারে ব্যাপক বিনিয়োগের অনুসন্ধান করে তার আয়ের উৎস জানতে চাইলে বেড়িয়ে আসবে থলের ভেতর থেকে কালো বিড়াল।