দীর্ঘদিন যাবৎ তেজগাঁও কলেজ সাংবাদিক সমিতি (তেকসাস) কমিটি নিয়ে অনিয়ম হয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেছে তেজগাঁও কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
অবশেষে ১৪ আগস্ট (বুধবার) দুপুরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একাধিক দাবিসহ তেকসাস এর উপদেষ্টা দেশবরেণ্য অনুসন্ধানী সাংবাদিক সাঈদুর রহমান রিমন, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বরাবর আবেদনপত্র দাখিল করেন। এতে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয় যে, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের যেন আজীবন সদস্যপদ বাতিল করা হয়।
অভিযোগ উঠেছে সমিতির কথিত উপদেষ্টা, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দালাল ইমরানুল আজিম চৌধুরী ওরফে ইমু চৌধুরীর বিরুদ্ধে। ছাত্রদের রক্তঝরানোর মতো অমানবিক কাজে জড়িত ফ্যাসিস্ট সরকারের লাঠিয়াল বাহিনী ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে কমিটি গঠন করে। কমিটির প্রধান দুইটি পদেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বসানো হয়।
সর্বশেষ ২০২২ সালে এককভাবে, ফ্যাসিস্ট সরকার দলীয়দের নিয়ে যে কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে সভাপতি সুজয় মজুমদার এবং সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণ আহমেদকে রাখা হয়। এদের কেউ কখনোই সাংবাদিকতার সাথে জড়িত ছিল না। কেবলমাত্র সাংবাদিক নাম ব্যবহার করে তারা পদ হাঁকিয়ে নিতেই এই একক কমিটি ঘোষণা করে।
তেজগাঁও কলেজ সাংবাদিক সমিতি (তেকসাস) এর বারবার নির্বাচনের দাবি করলেও নিজেকে দাবি করা উপদেষ্টা ইমু চৌধুরী তা মানতে নারাজ। অধিকাংশ সমিতির সদস্যরা এতে প্রতিবাদ জানাতে চাইলেও তাদের উল্টো হুমকির সম্মুখীন হতে হতো বলেও অভিযোগ উঠেছে।
উক্ত মনগড়া কমিটি হতে এ ধরনের অসাংগঠনিক কার্যক্রমের প্রতিবাদ জানিয়ে, নিজেদের জীবন রক্ষার্থে অনেকেই পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
সবশেষে ৫ই আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকার পদত্যাগ করলে তেজগাঁও কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আরো সোচ্চার হয়ে ওঠে ও তেকসাস’কে সংস্কার করতে বিক্ষোভ কর্মসূচি করে এবং ‘তেকসাস’ এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকসহ উপদেষ্টা বরাবর পৃথক দুইটি লিখিত আবেদন দাখিল করে।
আবেদন অনুরুপঃ
জনাব,
তেজগাঁও কলেজ সাংবাদিক সমিতি (তেকসাস) একটি ক্যাম্পাস সাংবাদিক সমিতি। এ সমিতি জাতির দুঃসময়ে এগিয়ে আসতে চাইলেও পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে এ সমিতিটি দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে এর ভাবমূর্তি ধ্বংস করে দিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তেজগাঁও কলেজ সাংবাদিক সমিতি’র কথিত উপদেষ্টা ফ্যাসিস্ট সরকারের দালাল সাংবাদিক ইমরানুল আজিম চৌধুরী ওরফে ইমু চৌধুরী (যিনি ফ্যাসিস্ট সরকারের শুধু দালালই নয় বরং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে ছাত্র জনতার উপর হামলার ইন্ধনদাতা), সভাপতি সুজয় মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণ আহমেদ প্রতিনিয়ত লাঠি-সোটা, রামদা নিয়ে নিজেরা উপস্থিত থাকতো এবং ছাত্রলীগকে মদদ দিয়ে মিথ্যে সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে ছাত্রদের রক্তঝরানোর মতো মানবতা বিরোধী কাজ এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল। এছাড়াও ছাত্রদের রক্তঝরানোর মতো অমানবিক কাজে জড়িত ছিলেন। আমরা মনে করি সাংবাদিকতার আড়ালে এদের কর্মকান্ড ছিল জাতীয় স্বার্থ ও রাষ্ট্র বিরোধী। ছাত্ররা এখন রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে। এসব জাতীয় দুশমনরা তেজগাঁও কলেজ সাংবাদিক সমিতি (তেকসাস) এর বা সাংবাদিকতার নাম ভাঙ্গিয়ে আর যাতে সাধারণ শিক্ষার্থী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জাতির ক্ষতি করতে না পারে সে জন্য তাদের আজীবন বহিষ্কার ও সাংবাদিকদের অঙ্গনে নিষিদ্ধ করার নিবেদন জানাচ্ছি।
ইতোমধ্যে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্যও ক্যাম্পাস প্রশাসনকেও অনুরোধ জানিয়েছি।
নিবেদক:
তেজগাঁও কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ