নিজস্ব প্রতিবেদক।। সক্রিয় হয়ে উঠেছে বরিশাল সাংবাদিক সংগঠনের নামে চাঁদাবাজ চক্ররা, চক্রটি সাংবাদিকতার মত মহান পেশাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সর্বত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আন্ডারগ্রাউন্ড ও নাম সর্বস্ব পত্রিকা অনলাইনের নাম ব্যবহার করে সংগঠনের নামে পিকনিক, দাওয়াত কার্ড দিয়ে প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে। তাদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সরকারি, বেসরকারি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।নানা অপরাধে জড়িতরা নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে সাংবাদিকতাকে টার্গেট করছে। আর তাতেই রাতারাতি সাংবাদিক বনে যাচ্ছে মাদক কারবারি, বিভিন্ন মামলার আসামি, চিহ্নিত দালাল ও প্রতারক সহ অপরাধীরা। তাদের মধ্যে নেই একাডেমিক যোগ্যতা, প্রশিক্ষণ ও লেখনীর যোগ্যতা চাঁদাবাজি করাই এদের মূল লক্ষ্য, উদ্দেশ্য। টাকার জন্য হুমকি ধুমকি তাদের দৈনন্দিকার। মূলধারার সাংবাদিকতার সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে পেশাদার সাংবাদিকদের। সেই সাথে কুলসুতি হচ্ছে মহান এই পেশা।
অভিযোগ উঠেছে, বরিশাল বিভাগীয় মেডিকেল সাংবাদিক পরিষদ নামে একটি সংগঠনটির ।দীর্ঘদিন ধরে পিকনিকের নামে দাওয়াত কার্ড দিয়ে চাঁদাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ৪ থেকে ৫শ কার্ড ছাপিয়ে মেডিকেল, ডায়াগনস্টিক, ইটভাটা, রাজনীতিবিদ, সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিষ্ঠানের কাছে কার্ড দিয়ে প্রায় ৫ লাখ টাকার মত চাঁদা তুলে।
কিন্তু ওই টাকা দিয়ে নামে মাত্র দুই এক জন সাংবাদিক বাদে গোটা ফ্যামিলি নিয়ে কুয়াকাটা পিকনিক করে এই সংগঠনের সভাপতি বিপ্লব আহমেদ ও সেক্রেটারি সিহাব তোহা।
চাঁদাবাজির শিকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারী বলেন, সংগঠনের সভাপতি বিপ্লব আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক শিহাব তোহা কক্সবাজার যাওয়ার নামে একটি দাওয়াত কার্ড নিয়ে আসে। আমাদের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চায়। প্রথমে ১০০০ টাকা দেই। টাকা নেয়নি বরং আকার ইঙ্গিতে ভয় ভীতি দেখায়। পরে বাধ্য হয়ে ২ হাজার টাকা দিয়ে মুক্তি পাই।
হাসপাতালের সামনে এক ডায়াগনস্টিক মালিকপক্ষ জানান, বরিশাল বিভাগীয় মেডিকেল সাংবাদিক পরিষদের একটি দাওয়াত কার্ড দেয়। প্রথমে কার্ডটি দেখে মনে করেছি বিয়ের কার্ড। কিন্তু পরে পিকনিক কার্ড দেখি। আমাদের কাছে কার্ড দিয়ে টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না চাইলেও পরে এই চাঁদাবাজরা বিভিন্ন কৌশলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিউজ করবে হুমকি দেয়। চাপের মুখে পড়ে দুই হাজার টাকা দিতে বাধ্য হয়েছি।
এভাবে বিভিন্ন রাজনীতিবিদ, সাধারণ মানুষ, সহ বিভিন্ন অসংখ্য লোকের কাছে ৪/৫শ কার্ড দিয়ে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মত চাঁদাবাজি তোলে। চাঁদাবাজরা চাঁদা দিতে না চাইলে বরিশাল সিনিয়র সাংবাদিকের নাম ভাঙ্গিয়ে ভয় দেখায়।
প্রতিবছর এই সময় আসলে এভাবে চাঁদাবাজি করছে বরিশাল বিভাগীয় মেডিকেল সাংবাদিক পরিষদ নামে এই ভুইপোর সংগঠনটি।চাঁদাবাজির বিষয়টি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক আলোড়ন হয়। পেশাদার সাংবাদিকদের বাদ দিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য এভাবে প্রতি বছর পিকনিকের নামে টাকা তোলে পকেট ভরছে এই সংগঠটি। সংগঠনের এক সদস্য জানান, পিকনিকের টাকায় দুই এক জন সাংবাদিক ছাড়া সব বিপ্লব ভাইয়ের পরিবারের সদস্য।
এ বিষয়ে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, সাংবাদিক সংগঠনের নামে পিকনিক চাঁদাবাজি চলছে এটা সত্য। এসব চাঁদাবাজি অপসংবাদিকতার সামিল। আমাদের সংগঠনের মধ্যে অনেক সদস্য ৪-৫টি সংগঠনের সাথে রয়েছে। কে কতগুলো সংগঠন রয়েছে আমরা তাদেরকেও নোটিশ করেছি। তারা ওসব সংগঠন থেকে পদত্যাগ করে আমাদেরকে অবহিত পত্র দিয়েছে।বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি আমির খসরু জানান, পেশাদার সাংবাদিক যাচাই বাছাই করে সবার দেখা উচিত। সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি করা কাম্য নয়।