দেশপত্র অনুসন্ধান, পর্ব-১: যশোর-২ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহজাদা ফিরোজ। ব্যাপক দাপুটে এই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে রয়েছে ভুড়ি ভুড়ি অভিযোগ, জানা যায় আতীতে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ জমা পড়লেও অভিযোগটি কোথায় যেন হারিয়ে যায়, তার বিরুদ্ধে কলম ধরলে নাকি তার পালিত ঠিকাদার সিন্ডিকেট পত্রিকা অফিসে হামলা করে বসে, সাবেক এক ছাত্রনেতাকে ঠিকাদার বানিয়ে বিভিন্ন কাজ বাগিয়ে দেয়ার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার সহকর্মীরা বলেন কর্মজীবনে যেখানেই ছিলেন সেখানেই টাকার মেশিন ঘুরাতেন এই প্রকৌশলী। তারি সহকর্মীরা হাস্যরসে আরও বলেন, বায়োস্কপে চোখ দিলেই নাকি দেখা যায় প্রকৌশলী শাহজাদা ফিরোজের দালান কোঠা জমি জমা গাড়ি-বাড়ি। ঠিকাদারদের কাছ থেকে ৫ পার্সেন্ট কমিশন নেওয়ায় সওজে তাকে অনেকেই মিঃ ফাইভ পার্সেন্ট নামে চিনেন। প্রকৌশলী শাহাজাদা ফিরোজ ও তার পরিবারের আয়বহির্ভূত সম্পদ ও কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ার অভিযোগ বেশ পুরোনো । মাহবুব আলম নামে জনৈক এক ব্যক্তি শাহজাদা ফিরোজ ও তার স্ত্রী শামীমা নাছরীন এর নামে দুর্নীতি দমন কমিশনে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। প্রাপ্ত অভিযোগে জানা যায়, বাসা নং- সি ব্লকের ২ নং রোডের (ফ্ল্যাট নং- এ/৬), শাহ আলীবাগ, থানা মিরপুর, ঢাকায় বসবাস করছেন শাজাজাদা ফিরোজ। অতীতে মানিকগঞ্জে কর্তব্যরত অবস্থায় নির্বাহী প্রকৌশলীর অনুগত হওয়ার কারণেই তাকে ব্যাপক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে দেখা যেতো। তৎকালীন সময় শাহজাদা ফিরোজের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঠিকাদারী টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের অভিযোগও রয়েছে। তিনি প্রতিটি ঠিকাদারদের কাছ থেকে নিয়মিত ৫% হারে এককভাবে অর্থ আদায় করেতেন বলে জানা যায়। তৎকালীন দুদকের অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায় যে, শাহজাদা ফিরোজ শাহ আলীবাগ ২৩ বাসার সি ব্লকে (ফ্ল্যাট নং এ/৬), থানা মিরপুর, ঢাকা ফ্ল্যাটটি ক্রয় করেছেন প্রায় ১ কোটি টাকা দিয়ে। ঢাকার গুলশান -২ এর এফ ব্লক, বাড়ী নং- ৬৪/২। উক্ত বাড়ীটির ৩য় তলায় ২৬০০ বর্গফুটের তার একটি ফ্ল্যাট রয়েছে তার স্ত্রীর নামে, তার ব্যক্তিগত ব্যবহারে রয়েছে জাপানী হোন্ডা কোম্পানির অর্ধকোটি টাকা মূল্যের একটি বিলাসবহুল গাড়ি (ঢাকা মেট্রো গ – ৩৭-৯৪-২৩)
রাজধানীর উত্তরা হাউজ বিল্ডিং এলাকায় সেক্টর নং- ১০, বাসা নং ৬৭, রোড ১১। উক্ত বাড়ীটি তার নিজের ১ টি ফ্ল্যাট রয়েছে সরেজমিন অনুসন্ধানে যার হদিস পাওয়া যায়। আরও জানা যায় ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন সাভার মৌজায় তার নিজ নামে ৫০ কাঠা জমি রয়েছে। সেখানে একটি কারখানা প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আয়কর নথি মূলে বরিশাল মূল শহরে তার ১২০ শতাংশ জমি, তার স্ত্রী শামীমা নাছরীন এর নামে ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে ১টি ৭ম তলা বাড়ী রয়েছে। বাড়ীটিতে ১৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে; ঢাকার মোহাম্মদপুর বসিলা এলাকায় তার স্ত্রীর নামে কয়েক বিঘা জমি রয়েছে বলে সূত্রটি জানায়। আরও জানা যায় তার ও তার পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের নামে বেনামে বিভিন্ন জায়গায় সম্পদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। রয়েছে শেয়ার মার্কেটে নামে বেনামে অর্ধশত কোটি টাকার ইনভেস্টমেন্ট। এছাড়াও কয়েকটি ব্যাংকে অর্ধ কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে।এ সকল সম্পদের শেষপর্যায়ের অনুসন্ধান চলছে, করা হচ্ছে চুল ছাড়া বিশ্লেষণ। শাহজাদা ফিরোজের টিআইএন নং ৫৭২৯৬৯৫৪৫৯৭২।
এলাকাবাসী বলেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে কর্মরত অবস্থায় কি এমন আলাদিনের চেরাগটাই না পেয়েছেন তিনি, রাজধানীতে বাড়ি গাড়ি ফ্লাট দেশের আনাচে-কানাচে জায়গা জমি কি নেই তার? কথাবার্তায় রয়েছে বেশ দাম্ভিকতা, তিনি বর্তমানে যশোর-২ সড়ক ও জনপথ বিভাগে উপ সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে শাহজাদা ফিরোজের সাথে তার মুঠোফোন নাম্বার যোগাযোগ করে তার বিষয়ে আনীত অভিযোগ সমূহের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনাদের কারা ইনফরমেশন দেয়, তাদের নাম বলুন।
দুদক সূত্রে শোনা যায় সম্প্রতি দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত এই প্রকৌশলীর ব্যাংক হিসাব জব্দ হতে পারে, শেয়ার মার্কেটে কোটি কোটি টাকা ইনভেস্টের তদন্ত শুরু করবে দুদক।