নিজস্ব প্রতিবেদক:
গণপূর্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আজমল হক যার বিরুদ্ধে দুর্নীতি অনিয়ম আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ আছে পাহাড় সমান। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ গণপূর্ত বিভাগ-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আজমল হক। রীতিমতো দূর্নীতি, অবৈধ সম্পদ বিদেশে অর্থ পাচার সহ বহুমুখী অপরাধে জড়িত। কিশোরগঞ্জে থাকা অবস্থায় অনিয়মের অভিযোগে সাসপেন্ড হওয়া সত্ত্বেও সাবেক সচিব শহীদুল্লাহ খন্দকারের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়মিত হন তিনি। তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম আখতারের ঘনিষ্ঠজন হওয়ার সুবাদে রাজধানীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর মেডিকেল কলেজ শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়েছেন এই দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী।
মেডিকেল কলেজ গণপূর্ত বিভাগ-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আজমল হক গণপূর্তের একজন স্বীকৃত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হিসেবেই পরিচিত। বর্তমানে তার অধীনে প্রায় হাজার কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। এসব প্রকল্পের বেশিরভাগ কাজ তার নিজস্ব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করিয়ে শত শত কোটি টাকা লোপাট করছেন তিনি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ গণপূর্ত বিভাগ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আজমুল হক সাবেক সচিব শহীদুল্লাহ খন্দকারের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় তিনি সীমাহীন ক্ষমতার অধিকারী হয়ে উঠেন। তিনি গনপূর্তের বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্ব পালনকালে তার নির্ধারিত বরাদ্দের বাহিরে ঘুপচি বিজ্ঞাপন দিয়ে নামে বেনামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ৷
এমনকি কাজ না করেই ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করার অভিযোগে শোকজও খেয়েছিলেন তিনি। অথচ গণপূর্ত অধিদফতর তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই নেয়নি ।
অভিযোগ রয়েছে তিনি ঠিকাদারদের কাজ দেওয়ার কথা বলে অগ্রিম ২০% কমিশনের টাকা নিয়েও তাদের কাজ দেননি তিনি। টাকা নিয়ে কাজ না দেওয়ায় ঠিকাদারদের হাতে লাঞ্চিত হতে হয় এই দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে।
তিনি ঠিকাদারদের সাথে সিন্ডিকেট করে ২০% কমিশনের বিনিময়ে কাজ দিয়ে থাকেন। ২০% কমিশন ছাড়া কোন ঠিকাদারকেই কাজ দেন না এই দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। গনপূর্তের দুর্নীতিবাজ এই কর্মকর্তার বিভিন্ন অনিয়ম আর দূর্ণীতি মন্ত্রণালয়ের নজরে আসলে তাকে বদলী করা হয় অন্য ডিভিশনে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছু গণপূর্ত অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, কিন্তু তার ক্ষমতার কাছে নাকি মন্ত্রনালয় অসহায়।
এছাড়া তিনি এপিপি ও থোক বরাদ্দের প্রকল্প পাশের ক্ষেত্রে ঠিকাদারদের কাছ থেকে ২০ শতাংশেরও বেশি।। কমিশন নিয়ে থাকেন। কমিশন না দিলে ফাইল আটকেও রাখেন ।
এছাড়া নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আজমুল হক সাবেক চিফ ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলমের ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালন করে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন। বর্তমানে অতি নি প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতারের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় গণপূর্তির সবচেয়ে আয়ের ও গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি।
সূত্র জানায়, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আজমল হক অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যেমে প্রায় শতকোটি টাকার সম্পদের মালিক। রাজধানীর গুলশানে আলিশান ফ্ল্যাট কিনেছেন যেটি মূলত তার ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নিয়েছেন ।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে ৮ কাঠার প্লট কিনেছেন তিনি। ঠিকানা: রোড-২৭/বি, বাসা নং-১৮৯/এ/সি, ধানমন্ডি-৩২। যার বাজার মূল্য প্রায় ১২ কোটি টাকা।
এছাড়া রামপুরা বনশ্রীতে রয়েছে ও তলা বিশিষ্ট আলিশান বাড়ী। যার ঠিকানা -ডি, বাসা নং- ৭৯/১/ডি। যার বাজার মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা।
রাজাধানীর বাসাবো বৌদ্ধ মন্দিরের পাশে সুগন্ধা ভিলার ৩য় তলায় ১৩শ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন তার স্ত্রীর নামে। যার বাজার মূল্য প্রায় অর্ধ কোটি টাকা।
এছাড়া তার স্ত্রীর নামে বসুন্ধরা সিটি মার্কেটের চতুর্থ তলায় ডি ব্লকে দোকান নং-৩৪/ডি এবং ৪৫/ডি এই ২টি দোকান ক্রয় করেছেন, যার বাজার মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা। যেটি বর্তমান ভাড়া নিয়েছেন।
মোহাম্মদপুর কাচা বাজারের পাশে একটি বাড়িসহ রাজধানীতে বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও জায়গা জমি কিনেছেন। তার রয়েছে ব্রান্ড নিউ হ্যারিয়ার লেকসাস গাড়ি।
গ্রামের বাড়িতে কয়েক’শ বিঘা ফসিল জমি ক্রয় করেছেন। এছাড়া কানাডায় তার বন্ধুর কাছে হুন্ডির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা পাচার করেছেন তিনি। এছাড়া তার স্ত্রীর ব্যাংক একাউন্টে রয়েছে কোটি কোটি টাকা যা তদন্ত করলে বেড়িয়ে আসবে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে প্রকৌশলী আজমল হকের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোন নাম্বারে অসংখ্যবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।