নিজস্ব প্রতিবেদক:
বগুড়ার ধুনট উপজেলার চিকাশি ইউনিয়নে প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে নজরুল ইসলাম নামের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছে, তিনি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের স্বাক্ষর জাল করে সোনালী ব্যাংক থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। বর্তমানে এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা শেরপুর উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদে সচিব হিসেবে কর্মরত।
জানা যায়, নজরুল ইসলাম ২০২৩ সালের ২ জুলাই চিকাশি ইউনিয়নে সচিব হিসেবে যোগ দেন এবং ২০২৪ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেখানে দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়েই, ইউনিয়ন উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের নামে থাকা সোনালী ব্যাংক ধুনট শাখার একটি একাউন্ট থেকে মোট ২৯ লাখ ৪০ হাজার ৮১২ টাকা জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে তোলা হয়। এ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে ৩০টি চেক।
অভিযোগে বলা হয়, ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জুয়েল এবং সদস্য শাহানা আক্তারের স্বাক্ষর জাল করে নজরুল ইসলাম ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৯ লাখ ৭৪ হাজার ৬৩৮ টাকা, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১৩ লাখ ৯০ হাজার ৬৭৪ টাকা এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আরও ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা তুলে নেন।
চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জুয়েলের অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসন তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আজ মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) তদন্ত কমিটির প্রধান ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খায়রুজ্জামান জানান, “অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে নজরুল ইসলামকে নিজ কার্যালয়ে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে।”
স্থানীয়দের দাবি, এত বড় অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করেও নজরুল ইসলাম এখনও সরকারি দায়িত্বে বহাল থাকায় প্রমাণ হয়, দুর্নীতিবাজরা আজও প্রশাসনের ছত্রছায়ায় রক্ষা পাচ্ছে। তারা অবিলম্বে নজরুল ইসলামের বহিষ্কার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে—একজন ইউনিয়ন সচিব এত বড় অনিয়ম কীভাবে করলো, আর কতজন এর সঙ্গে জড়িত ছিলো?
এব্যাপারে অভিযুক্ত সচিবকে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।