শিরোনাম
রংপুরে চিড়িয়াখানার ভেতরের শিশুপার্কে ট্রেনের নিচে পড়ে আড়াই বছর বয়সি এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে রংপুরে প্রক্সি পরীক্ষা দিতে এসে ব্যাংক কর্মকর্তার ১ মাসের জেল সাংবাদিকতায় সকল বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের মানুষিকতা থাকতে হবে প্রশিক্ষণ কর্মশালায়-শিবলী সাদিক খান অফিসে ঘুষ, বাইরে রাজনীতি -ফেরদৌস আলমের হাতে মিরপুর বিটিসিএলের দম বন্ধ!” টিউশন ফি বৃদ্ধিতে দিশেহারা তেজগাঁও কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা দিনাজপুরে প্রশ্ন ফাঁস চক্রের ডিভাইস সহ গ্রেফতার – ০৩ হাসিনা-ওবায়দুল কাদেরসহ ১৭২ জনের নামে মামলা এনসিপি ক্ষমতায় না গেলেও কারও ‘পোষা’ দল হবে না: সারজিস আলম এ মাসেই ২০০ প্রার্থীকে গ্রিন সিগন্যাল দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন আহমেদ গাইবান্ধায় এসপি, ওসির বিরুদ্ধে এসআইয়ের স্ত্রীর মামলা

অফিসে ঘুষ, বাইরে রাজনীতি -ফেরদৌস আলমের হাতে মিরপুর বিটিসিএলের দম বন্ধ!”

Mehraz Rabbi

নিজস্ব প্রতিবেদক।। যখন অফিসকে ‘নিজের রাজ্য’ মনে করা অপরাধ না, তখন বিটিসিএল মিরপুর শাখার ক্যারিয়ার প্ল্যান অনুকরণীয় হয়ে ওঠে, কেবল মাত্র একটাই শর্ত: রাজা হতে হবে কিন্তু প্রতিদিন নতুন দলের পতাকা লাগাতে পারার ক্ষমতা রাখবেন অভিযোগকারীদের ভাষ্য অনুযায়ী, সেই রাজা হলেন শফিক মো. ফেরদৌস আলম যে অফিসে ঢোকার পরেই মনে হয় আপনি ঢুকলেন কোন রাজনৈতিক মেলায়, আর রেজিস্টারের দরজায় লেখা আছে: “চা-পান ও কমিশন দিয়ে প্রবেশ বাধ্যতামূলক।”

অফিস না ‘চায়ের দোকান’-দুই মুহূর্ত অফিসিয়াল, বাকি সময় বাজারি

মিরপুর বিটিসিএলের কর্মীরা (নাম প্রকাশ না করে) জানিয়েছেন, নতুন সংযোগ নেবেন? টাকা রাখুন। লাইন ট্রান্সফার করতে হবে? মুচকি হাসি আর একটা খতিয়ান। এ খতিয়ানের নামই ‘চা-পান/কমিশন’। যারা ওই খতিয়ানে সই করতে অস্বীকার করেন, তাদের আবেদন ঝুলে থাকে এমনভাবে যেন মাসে দুইবার ‘তালিকা-নিচেই’ রাখা নন-অ্যাকটিভেটেড ফাইল ही কপাল খুলে দেয়।

আর খেয়াল করেছেন কি, ওই ফাইলগুলো গায়ে গায়ে পড়ে থেকে যায়, যেন প্রশাসনিক স্থবিরতাই এখানে একটা আর্ট অভিযোগকারীরা বলেছে, এসব দেখাশোনা করেন ফেরদৌস আলম, যে কাউকে কানে ফিসফিস করে নির্দেশ দিলেই বদলি, বেতন আটকে দেয়া, বা ‘অদৃশ্যভাবে’ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অফিস না, কি মঞ্চ, নির্দেশ আসলে ‘নড়েচড়ে বসে’ সবাই।

পদোন্নতি নয়, ‘পদায়ন’- বন্ধুদের জন্য বিশেষ ছাড়

এখানে নিয়ম নয়, যুক্তি নয়, এখানে আছে ‘চেনা-চেনা’ লোকদের জন্য স্বতন্ত্র প্রাধান্য। অভিযোগ অনুযায়ী ফেরদৌস আলম তার ঘনিষ্ঠদের টপ-লিস্টে রেখে দেন সব ফিল্ড রিলেটেড কাজ। যারা ‘হ্যাঁ’ বলেন, তারা হয় তাড়াতাড়ি উপরে, যারা ‘না’ বলেন,তাদের বদলি করে দেন তীব্র দক্ষতায় যেন “চাকরি-রিয়েলিটি শো” চলছে। সুত্রের দাবি, বেতন সংক্রান্ত ফাইল ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে রেখে ‘অপছন্দীরা’ শেখায় অফিসের সংস্কৃতি।

রাজনৈতিক রঙ বদলানো- গিরগিটি না কংক্রিট কৌশল?

আশ্চর্যের কিছু নেই, অভিযোগটা বলছে ফেরদৌস আলম রাজনৈতিক রঙ বদলান তরঙ্গগতভাবে। কাল আওয়ামী লীগ, পরশু বিএনপি,এবং মাঝে মাঝে এমন চমক দেওয়া যে কেউ টিকবোই না। স্থানীয়রা বলছেন, “গিরগিটি” শব্দটাই যেন ছোট লাগে, কারণ গিরগিটেরও একবার রঙ ধরলে শান্ত থাকে, কিন্তু এখানে তো রং বদলানোই কৌশল। অভিযোগে বলা হয় ২০১৩-এ তিনি ছিলেন জাতীয় শ্রমিক লীগ সংযুক্ত; তারপর প্রতিপক্ষ বদলে গিয়েছে; বর্তমান পরিচয়: ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বাস্তুহারা দল’(?!),নামটা শুনে মনে হয় কেউ অ্যাক্সেসরাইজেশন দিয়ে নতুন ব্র্যান্ড লঞ্চ করেছে।

ছবি, পরিচয়পত্র আর ‘ভিসিটিং কার্ড’-ইঙ্গিত পাতার ক্যাটালগ

কেউ বলেছে, তাঁর কাছে আছে ছবির আলবাম যেখানে তিনি অনেকে সঙ্গী-সহ, যার মধ্যে একজন ছিলেন ‘সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’(!) আর যেটা আছে, সেটাই প্রমাণ হিসেবে গণ্য। প্রকাশ্যে হাত মেলানো অনেক ছবি মানে কী? তখনি কি প্রশাসনিক সুবিধা পেয়েছেন? অভিযোগকারীরা বলছেন, হ্যাঁ, আর তদন্ত হয়েছিলো, ২০১৮ সালের অভিযোগগুলো রহস্যজনকভাবে চাপা পড়ে যায় উচ্চপর্যায়ে নিষ্পত্তি” বলা হয়। কারা নিষ্পত্তি করল? সেটা জানতে চাইলে অফিসের কাগজপত্র নিজেই এক প্রবীণ নাটকের কাস্টিং বোর্ড হয়ে ওঠে।

ছেলে-ছেলের বডি ল্যাংগুয়েজ, রাজনৈতিক মিশ্রণ আর আপস

ফেরদৌস আলমের ছেলে শরীফ নিনাদের নামও এসেছে, ২০১৮ সালে ছাত্রলীগের সংগঠক হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। সেখানে সংঘর্ষ, এবং পরে গুরুতর আঘাত,ঘটনা যা অপ্রত্যাশিতভাবে নাটকীয়। অভিযোগকারীরা বলছেন, বাবা-ছেলে দু’জনই রাজনৈতিক পরিচয়কে ‘সুবিধার টুল’ হিসেবে ব্যবহার করেন। আর ফেরদৌস নিজেই কোনো কোনো সময়ে বিএনপি-সুবিধাবাদী মেজাজে ধরা দেন যেন রাজনৈতিক রঙ বদলানো হচ্ছে শুধুই সুযোগ উদযাপনের জন্য।

শেষের ঢেউ -অভিযোগের বাইরে ব্যবস্থা কবে?

বহু অভিযোগ তবু কার্যকর কোনো তদন্ত হয়নি, কমিটি গঠন আর ‘নথি’ পাঠানোর অঙ্গীকারে বিষয়টি আটকে আছে। অভিযোগকারীরা টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, বিটিসিএল চেয়ারম্যান ও কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন, তারা দাবি করেন অবিলম্বে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক এবং যে কোনো অনিয়মে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তো কি হবে? অফিসিয়াল কাগজ যে কবে জেগে উঠবে, সেটা যে সময়ই বলে না, তবু আশা আছে, কারণ নাহলে তো মিরপুরের গ্রাহকরা প্রতিদিনই ‘চা-পান ফি’ হয়ে চুপ করে থাকবে!

সামান্য উপদেশ (সরকারি, কিন্তু বন্ধুসুলভ)

অফিস যদি পাবলিক সার্ভিস হয়, তাহলে সে স্থান ব্যক্তিগত বাজার হবেনা, কাগজে লিখে সেটা বলা যায়, কিন্তু বাস্তবে করতে হবে।আবেদন ঝুলবে না, তা নিশ্চিত করতে তৎপর নজরদারি দরকার।রাজনৈতিক পরিচয় কখনোই সরকারি কাজের ওজন করে না, যদি করে, তাহলে চাহিদা থাকবে, আর সেটাই সমস্যা।

মিরপুর বিটিসিএল যদি আবার কোনদিন ‘স্বচ্ছতার নকশা’ দেখতে চায়, তাহলে প্রথমেই দরকার হবে, শক্ত অবস্থায় স্ট্যান্ড নেওয়া প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর; আর দ্বিতীয়ত, দৃঢ় ও স্বতন্ত্র তদন্ত। নয়তো ফেরদৌস আলমের ‘রং-বদল সমারোহ’ চলতেই থাকবে, আর মিরপুরের সাধারণ মানুষ হাসি-আনন্দে বলবে, “আরেকটা দিন, আরেকটা রং।”

 

Leave a Reply