সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ৬ পরিবার , স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি ও ডিআইজির কাছে আবেদন
আমাকে মেরে ফেলবে, আমি তাদের ভয়ে আছি । আমার সন্তানদের পড়ালেখা বন্ধ। পরিবারসহ ৬ টি পরিবার সন্ত্রাসীদের ভয়ে ও হুমকিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে এমন তিনটি অভিযোগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব , আইজিপি ও ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজির কাছে গতকাল (৪ জুন ২০২৩) আবেদন করেন আল আমিন বেপারী নামের এক ভুক্তভোগী। আবেদনে বলেন, মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার উত্তর পিঙ্গনালী আদ্দরপাড়া মৃত নওয়াব আলী
মোঃ কামাল শেখ, মোঃ সিরাজ শেখ (উভয় সাং— উত্তর পিঙ্গনালী আদ্দরপাড়া, থানা— লৌহজং, সোহরাব তালুকদার (৫০), পিতা— মৃত রশিদ তালুকদার, সাং— মধ্যপাড়া গাঙ্গুলী বাড়ী, মোঃ খোকা খা (৫০), পিতা— সুলতান খান, সাং— মধ্যপাড়া পশ্চিমপাড়া, উভয় থানা— সিরাজদিখান, রফিকুল শেখ (৩৫), পিতা— মৃত নওয়াব আলী শেখ, সাং— উত্তর পিঙ্গনালী আদ্দরপাড়া, থানা— লৌহজং, মোঃ চুন্নু শেখ (৫৫), পিতা— মৃত সেরু শেখ, রাসেল শেখ (৩৭), পিতা— মোঃ চুন্নু শেখ, উভয় সাং— মধ্যপাড়া পশ্চিমপাড়া, উভয় থানা— সিরাজদিখান, সর্বজেলা— মুন্সীগঞ্জ সহ আরো অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন।
আবেদনকারী আলামিন পেশায় একজন অটোরিক্সা ইজিবাইক মিস্ত্রী। কামাল শেখ এলাকার দাঙ্গাবাজ, সন্ত্রাসী, মামলাবাজ, খুনি প্রকৃতির লোক। খুন—খারাপি, দাঙ্গা—হাঙ্গামা, মারামারি তাদের পেশা।
আল আমিন বেপারি বলেন, আমাকেসহ আমার আত্মীয়—স্বজনকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে কামাল শেখ। তারা গত ০৭/০৫/২০২৩ ইং তারিখ অনুমান সকাল সাড়ে ১১টার সময় আমার পৈত্রিক সম্পত্তি জোরপূর্বক বেদখলের উদ্দেশ্যে
ভাড়া করা সন্ত্রাসীদেরকে নিয়ে আমার উক্ত জমি বেদখলের চেষ্টা করে। এমতাবস্থায়, আমি ও আমার পরিবারের লোকজন প্রতিবাদ করলে আমাদেরকে একেবারে খুন করবে বলে দা, লাঠি, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে । আমি ও এলাকার লোকজনসহ মোবাইল ফোন দিয়ে তাদের জমি বেদখলের এবং অস্ত্রের ছবি এবং ভিডিও ধারণ করি উক্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভায়রাল হয় এবং বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার হয়।
আল আমিন বেপারি আরও বলেন, উক্ত সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার পর কামাল শেখগন আরও বেপরোয়া হয়ে পথে ঘাটে খুন করবে বলে হুমকি দিতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে মোঃ হোসাইন (১০)সহ আমার পরিবারের আরও ৪/৫ জন ছেলে—মেয়ে পড়াশুনা একেবারেই বন্ধ। তারা ঘটনার পর থেকে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের নিয়ে গভীর রাতে আমার স্ত্রী, পরিবারের মহিলাদেরকে ঘরের দরজায় এসে ডাকাডাকি করে এবং ভয়ভীতি দেখায় ও হুমকি দিয়ে বলে— ‘আল আমিন ঘরে আছে? ঘরের দরজা খুলেন ওরে আজ শেষ করে দিমু। এর ভয়ে পরদিন ০৮/০৫/২০২৩ ইং তারিখ থেকে আমি স্থানীয় লৌহজং থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে পুলিশ মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করেন। মামলা নং—০৫, ধারাঃ ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৪২৭/৩৭৯/৫০৬ দঃবিঃ। উক্ত মামলায় একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরবর্তীতে ১নং বিবাদীর নির্দেশে সকল বিবাদীগণ আমাকে, আমার পরিবার ও আত্মীয়—স্বজনদের ৬টি পরিবারকে বিভিন্ন সাজানো, মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ঘটনা সাজাইয়া লৌহজং থানায় অভিযোগ দায়ের করে এবং বিবাদীগণ আমাকে ও আমার পরিবারকে হুমকি দিয়ে বলে— “থানায় অভিযোগ দিয়েছি, তোদের আগে গ্রেফতার করাইয়া পরে মামলা এজাহার হিসেবে গণ্য করে কোর্টে চালান করাইব।” আমরা তাদের ভয়ে আজ ২৬ দিন যাবৎ ৬টি পরিবার বাড়ী ছাড়া। বাড়ী—ঘর ফেলে বিভিন্ন আত্মীয়—স্বজনের বাড়ীতে থাকতে হচ্ছে। ছেলে—মেয়েদের লেখাপড়া একেবারেই বন্ধ। আমরা বাড়ী থেকে চলে আসার পর বিবাদীগণ বিভিন্নভাবে আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি দখল করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বিবাদীগণদের এলাকায় একটি ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী লালন—পালন করে। আমিসহ আমার এলাকার নিরীহ মানুষকে তারা ছাড় দেয়নি। তাদের বিরুদ্ধে থানায় ও কোর্টে একাধিক মামলা আছে। ১নং বিবাদীর নির্দেশে আমাদের ৬টি পরিবারের যেকোন সদস্যকে যেকোন সময় পথে ঘাটে বড় ধরণের ক্ষতিসাধন করতে পারে। আমাকে অপহরণ করিয়া গুম খুন করে বস্তা বন্দি করে লাশ নদীতে ফেলে দিবে বলেও হুমকি প্রদান করেছে। গতকাল ০৩/০৬/২০২৩ ইং তারিখ আমার আত্মীয় আয়েশাকে হুমকি দিয়ে বলে— “নারায়ণগঞ্জে ৭ খুন, তোদের করবো ২০ খুন, ওদের কিছুই হয়নি, আমাগোও কিছু করতে পারবি না, টাকা হলে সব হয়।” এমতাবস্থায়, উল্লেখিত সন্ত্রাসী বিবাদীগণের ভয়ে আমরা জান—মালের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগিতেছি।
লৌহজং থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল্লা-আল- তায়াবীর জানান, এঘটনার মামলা হয়েছে। আসামি আটক করে আদালতে চালান করেছি। আল আমিনের নামে কোন মামলা আমার থানায় নেই। কেও অভিযোগও করেনি। আমি আইনীভাবে সহোগিতা করবো।