দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধিঃ
ঢাকা দোহার উপজেলার উত্তর মধুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষকের ৪ জন ছাত্র এমন খবরের ভিত্তিতে অনুসন্ধান চালায় সাপ্তাহিক দেশপত্র টিম।সরেজমিনে দেখা যায় -শিক্ষকদের মধ্যে অনেকেই সময়মতো ক্লাশে আসেন না।আবার কেউ না বলেই মাসের পর মাস অনুপস্থিত।
অভিভাবক এলাকাবাসীর অভিযোগ -এই স্কুলের পড়ালেখার মান একেবারেই খারাপের দিকে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন ” আমার ছেলে এবার ক্লাস ফাইভে,তাকে জিজ্ঞেস করেন সে তার বাবা মা এমনকি নিজের নাম গ্রামের নাম পর্যন্ত সঠিকভাবে লিখতে পারেনা। যে কয়জন ছাত্র -ছাত্রী পরীক্ষা দিছে তাও ফেল মারছে। এই ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা মৌখিক অভিযোগ ও করেছি”
এ ব্যাপারে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা নাছিমা ম্যাডামের বক্তব্য হলো -“করোনাকালীন সময় থেকেই এ স্কুলের ছাত্রছাত্রী কমতে শুরু করেছে।তাছাড়া পাশাপাশি আরও দুইটি স্কুল মাদ্রাসা থাকায় ছাত্রছাত্রী অন্যত্র চলে যাচ্ছে। আসলে খাতাকলমে মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৪৮ হলেও উপস্থিতি ৪ – ৫ জনের বেশি নয়। এ ব্যাপারে আমি চেষ্টা করছি এমনকি ছাত্রছাত্রীদের বাড়ি বাড়ি যেয়েও আমি তাদের স্কুলমুখী করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তাছাড়া এখানকার অভিভাবকরা সচেতন না,কিছু কিছু অভিভাবক আমার ও বিদ্যালয়ের ভালো চায়না।এদের ব্যাপারে আমি থানায় অভিযোগ করে রেখেছি।”
এব্যাপারে স্থানীয় উপজেলা শিক্ষা অফিসে জানতে চাইলে কর্তব্যরত এক কর্মকর্তা বলেন – ” শিক্ষকরা
সকাল পৌনে নয়টায় স্কুলে উপস্থিত থাকবে।নটায় ক্লাস শুরু, বিকেল সারে চারটা পর্যন্ত স্কুলে থাকার নিয়ম।এই রুটিনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। একজন শিক্ষিকা এক বছর ধরে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে আমার পুরোপুরি জানা নেই তবে তিনি ছয়মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছিলেন বাকী ছয় মাস ধরে কেনো স্কুলে আসেননা তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ স্কুলের একজন অভিভাবক সদস্য বলেন” স্কুলটির ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা শংকিত! কর্তৃপক্ষের সুদৃস্টি কামনা করছি।”
দেশপত্র টিমের বিশেষ অনুসন্ধানে দেখা যায় , দীর্ঘ দিন ধরেই স্কুলটির পাড়ালেখার মান খুব নিম্নগামী যা বিগত রেজাল্ট গুলো দেখলেই বুঝা যায়। স্কুলে সঠিক সময় না আসা ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ার প্রতি গুরুত্ব নাদেয়া।নিয়ম বহির্ভূত মনমত ছুটি কাটানো যা খুবই উদ্বেগজনক।
বিধিমোতাবেক যদি কোনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫০ জনের কম ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি থাকে তাহলে পাশ্ববর্তী কোনো স্কুলের সাথে এই ছাত্রছাত্রীদের যোগ করে এই স্কুলের শিক্ষকরা সে স্কুলে যেয়ে ক্লাস নিবে। নিজেদের বিশেষ স্বাধীনতা ও স্বার্থের কারণে সে নিয়মও মানছেন না ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা। এই শিক্ষিকা ও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় বিদ্যালয় হারাচ্ছে শিক্ষার সুনাম ও সরকার হারাচ্ছে মাসে মাসে লাখ লাখ টাকার বরাদ্দকৃত অর্থ কড়ি। এলাকার বিশেষ সচেতন মহল ও অভিভাবক সদস্যবৃন্দের একমাত্র চাওয়া কর্তৃপক্ষ যেনো বিদ্যালয়ের সার্বিক দিকে বিশেষ নজরদারী করেন।