নিজস্ব প্রতিবেদক – সিরিজ রিপোর্ট (০১):- কোটা বিরোধী আন্দোলন এর মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়। স্বৈরাচার সরকার আন্দলোনরত ছাত্রদেরকে রাজাকার ও রাজাকারের সন্তান, নাতি,পুতি বলেও থুকমা দেওয়াটাই ছিলো সরকারের বড় পতনের মূল কারন। তবে এই ছাত্র আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে ছাত্রদের সাথে মিশে ছিলেন নূর মোহাম্মদ এর মতন রাজাকার”রা”। ছাত্র আন্দোলন ছিলো প্রথমে কোটা বিরোধী সংস্কারের আন্দোলন, নিরস্ত্র ছিলেন ছাত্ররা জ্বালাও পুড়াও ভাঙ্গচুর কিংবা আগ্নেয় অস্ত্র নিয়ে আন্দোলনে বিশ্বাসী ছিল না। তাই তো নিরস্ত্র ছাত্র আবু সাঈদ ও মুগদ্ধের মতোন বীর ছাত্ররাও বলির পাঠা হতে হয়েছে। এই ছাত্র আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে ৭১ এর যুদ্ধের রাজাকারদের মতোই ছাত্রদের সাথে যোগ দিয়ে শুরু করেছিলেন নাশকতা, পুলিশ প্রশাসন এর উপরে হামলা গাড়ি ভাঙ্গচুর জ্বালাও পোড়াও ও পুলিশের ওপরে হামলা করে হত্যা করার মতোন ঘটনাও ঘটিয়ে ক্ষিপ্ততা তৈরি করেছেন। যার ফলে আরও বেশি মানুষ প্রাণ হারাতে হয়। ঠিক তেমনি কুমিল্লায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে চেয়েছিলেন কুমিল্লা পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এর চাঁদাবাজ নূর মোহাম্মদ।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে মিশে নূর মোহাম্মদ নানান ভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয় তার পরে থেকে ১৪/০৭/২০২৪ইং তারিখ থেকে দফায় দফায় ছক আকাঁতে শুরু করেন ও একের পর এক খসড়া করেন “ছক” এর। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে নূর মোহাম্মদ তার একটি বাহিনী অস্ত্রসস্ত্র ও প্রেট্রোল বোমা নিয়ে কাজ করেন প্রশাসনের উপরে হামলার। একটি ছক আঁকেন যেই নির্দেশনা এসেছিলো নূর মোহাম্মদ এর রাজনৈতিক লিডারের কাছ থেকে। একটি গ্রুপ ছাত্রদের সাথে মিশে বিভিন্ন সাংবাদিক ও ছাত্র সহ বিভিন্ন মানুষ এর উপরে হামলা চালাবেন “সু”কৌশলে যাতে করে সবাই মনে করেন এরা ছাত্রদের পক্ষে আর হামলার দায়ভার নেবেন প্রশাসন। তেমনি বাংলা টিভির সাংবাদিকের গাড়ি বহর পুড়িয়ে দেন, সাংবাদিক দেলোয়ার হোসেন জাকিরকে বেদম মারধর করলে হাসপাতালে অনেক দিন চিকিৎসা নিতে হয়েছে আরও অসংখ্য সাংবাদিক পুলিশ ও জনসাধারণের উপরে অতর্কিত হামলা চালানো হয় যেই সব দায়ভার ছাত্রদের উপরে চাপানো হয়। কুমিল্লা কোট বাড়ি ফাঁড়ি থানাটি যখন চার দিকের আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে পরছিলেন ১৬ তারিখে থানায় হামলা হলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে ফাঁড়ি থানাটি ১৬ তারিখ রাতেই বন্ধ করে দেন। পরে ১৭/০৭/২০২৪ইং তারিখ রাতে আঁকা ছক মোতাবেক কুমিল্লার সুয়াগাজী থেকে শুরু করে সদর ও সদর দক্ষিন, পদুয়ার বিশ্বরোড, কোটবাড়ি, ক্যান্টনমেন্ট এলাকা পর্যন্ত নূর মোহাম্মদ এর গ্রুপ কাজ করেন। তাদের ছক ছিলো প্রশাসন এর উপরে হামলা করে প্রশাসনদের ক্ষিপ্ত করবেন। প্রশাসন পাল্টা হামলা চালালে ছাত্র, জনতা ও সাধারণ মানুষ ক্ষেপে যাবেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আঁকা ছকে অর্থের বিনিময়ে সাথে যুক্ত হোন মোতালেব ও আওয়ামিলীগ এর কিছু দালাল সাংবাদিক, নূর মোহাম্মদ এর পরিবারের ২/৩ জন সাংবাদিক সদস্যরা। তারা সেই সব কিছু অন্য সাংবাদিকদেরকে দিয়ে কাভারেজ করে মিডিয়াতে প্রচার করবেন। প্রশ্ন উঠে কেন? অন্য সাংবাদিক দিয়ে ভিডিও ফুটেজ কাভার করলেন কারন আওয়ামিলীগ পন্থী সাংবাদিকেরা মাঠে কাজ করতে পারেনি কারন তারা আওয়ামী পন্থী ছিলেন যদিও এখন আবার জামায়াতের ছাতা ধরেছেন নিজেদেরকে বাঁচাতে তবে যারা এদেরকে সাহায্য করছেন তারা নিজেরাও জানেন না যে তাদেরকে ব্যবহার করা হয়েছে। তারা শুধু সহকর্মী ও সিনিয়র ভাইদেরকে তথ্য দিয়ে সাহায্য করার চিন্তা ছিলো মাথায়, কোন স্বার্থই ছিলো না তাদের। আর এইসব হামলা চালাতে মোতালেব প্রায় ৩০০ থেকে ৫০০ জনের মতন একটি বাহিনী দেয় নূর মোহাম্মদকে!
১৮/০৭/২০২৪ইং তারিখে আঁকা ছকে সফল হয়েছে, সদর দক্ষিন মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) “র” গাড়ি বহরে হামলা ও ভাংচুর করে পেট্রোল দিয়ে আগুন জ্বালিদেন নূর মোহাম্মদ এর বাহিনীরা। উক্ত ঘটনায় মামলায় ২ নাম্বার এজাহার ভূক্ত আসামি করা হয় নূর মোহাম্মদকে কিন্তু নূর মোহাম্মদ এখনো ধরা ছোয়ার বাহিরে। কুমিল্লায় একাধিক হত্যা মামলা দায়ের হলেও এতে নাম নেই নূর মোহাম্মদের। ছাত্র আন্দোলনে নূর মোহাম্মদ এর হাতে অনেকেই অস্ত্র সহ দেখতে পেয়েছেন বলে অনেকেই মন্তব্য করছেন তবে অস্ত্রসহ ছিলেন কিনা এটি এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি কিন্তু অসংখ্য বাহিনী নিয়ে মাঠে ছিলেন এটা প্রকাশ্যে প্রমানিত। তবে কুমিল্লা জেলা বিএনপির নূর মোহাম্মদের লিডার তাকে বাঁচিয়ে নিচ্ছেন বলে রাজনৈতিক প্রাঙ্গনে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। উক্ত মামলার বিষয় কুমিল্লা সদর দক্ষিন মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলে নূর মোহাম্মদকে দ্রুত গেফতার করা হবে বলে জানান।
৫ই আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতন হওয়ার পরে ৫০০ থেকে ৭০০ বাহিনী নিয়ে থানা ও পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড সংলগ্ন সদর দক্ষিণ এসপি (সার্কেল) অফিস গুলিতে হামলা চালান চালিয়ে লুটের পর আগুন লাগিয়ে দেয় নূর মোহাম্মদ সহ তার বাহিনীরা। এই বাহিনীর যোগান দাতা ছিলেন মোতালেব হোসেন। থানা গুলিতে হামলা ভাঙ্গচুর ও অস্ত্র লুটের মিশন ছিলো নূর মোহাম্মদ এবং মেতালেব হোসেনের।
অস্ত্রের নেশা এটা নূর মোহাম্মদ ও মোতালেব হোসেন এর নতুন কিছু নয় ২০১৮ সালেও নূর মোহাম্মদ কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন স্থানে গোলাগুলি করেছেন সংবাদের ছবিতে অস্ত্র হাতে নূর মোহাম্মদ যদিও শিকার করছেন না যে এটা তার ছবি বলে হেসে উড়িয়ে দেন ও ফেইগ বলেও দাবী করেন ও সকল অভিযোগ মিথ্যা ভিত্তিহীন বলেও দাবী করেন। নির্বাচনে মোতালেব হোসেন গুলাগুলির ছবি, সে নির্বচনে কার পক্ষে গোলাগুলি করেছেন এই বিষয় কিছুই জানা যায়নি। তবে নূর মোহাম্মদ ও মোতালেব হোসেন অস্ত্র খুব ভালো চালাতে পারেন এটার প্রসংশা না করলেই নয়। পুলিশের এতো এতো অস্ত্র, গোলাবারুদ ও টিয়ারসেল লুট এই গুলি এখনো উদ্ধার হয়নি। হয়তোবা এইসব অস্ত্রসস্ত্রের দাপট খাটিয়ে নূর মোহাম্মদ রাতারাতি গড়ে তুলেছেন তার সম্রাজ্যের পাহাড় ৫/৭ টি নতুন মটর সাইকেল, নতুন গাড়ি পোষাকের ধরন সহ চালচলন পরিবর্তন আচকায় পরিবর্তন। সরজমিনে অনুসন্ধান করে জানা যায় কুমিল্লা বিশ্বরোড এর সব গুলি পরিবহণ স্ট্যান্ডে আগে ছাত্রলীগের অপু চাঁদা উত্তোলন করতেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় অপু। পরবর্তীতে নূর মোহাম্মদ এর নেতৃত্বে পরিবহণ স্ট্যান্ড গুলি দখলে নিয়ে যায়। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ হয়েছে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ একটি স্ট্যান্ড দখল করছেন। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে নূর মোহাম্মদ এর নেতৃত্বে প্রতিদিন এখানে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা উত্তোলন হয়। নূর মোহাম্মদ আওয়ামিলীগ এর আমলে মাদকের ক্যারী করতেন ২০০০ থেকে ৫০০০ হাজার টাকার বিনিময়ে তার একটি পুরাতন প্রাইভেট কারে করে। রয়েছে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও সরকার পতনের পর রাতারাতি আলাদিনের চেরাগ পাওয়ার মতোন পরিবর্তন হয়ে গেল তার। তবে তার অধিনে যারা চাঁদা উক্তোলেনে কাজ করছেন তাদের প্রায় ৫০ টিরও বেশি পরিবার ভালো চলছেন, কিন্তু চাঁদা না উঠালে মনে হয় আরও কয়েকশো পরিবার ভালো চলতেন। অভিযোগ এর বিষয়ে নূর মোহাম্মদ ও মোতালেব হোসেনের কাছে জানতে চাইলে সমস্ত মিথ্যা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তবে চলমান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে দুজনেই প্রচুর পরিমান ত্রান সহায়তায় দিয়েছেন বলেও সরজমিনে দেখা যায়। (সংবাদ চলবে)।