শিল্পী আক্তার, রংপুর ব্যুরো :- রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় রংপুর-৩ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সামসুজ্জামান সামু অভিযোগ করেন, মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই তাকে নিয়ে কিছু মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি বলেন, “৫ আগস্টের পর আমি কোনো অপরাধ করিনি। আমাকে এবং আমার দলকে হেয় প্রতিপন্ন করতে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।”
তিনি জানান, রংপুরের একজন সিনিয়র সাংবাদিক তার ফেসবুক পেজে অসত্য তথ্য প্রচার করছেন, যা একটি বিশেষ মহলের ইন্ধনে হচ্ছে। সামু বলেন, “দলের ভেতর কিছু লোক আছে যারা শুরুতে আমার বিরুদ্ধে কাজ করলেও, বিশেষ সময়ে তারা আমার পক্ষেই আসবে।
“তারেক রহমানের দিক নির্দেশনাতেই আমারা সত্যের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে রাজনীতি করে উল্লেখ করে সামসুজ্জামান সামু বলেন, “আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশ অনুসরণ করাই আমাদের দায়িত্ব। দেশের ২ কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের যে ঘোষণা তিনি দিয়েছেন, তা বাস্তবায়িত হলে দেশ বদলে যাবে। এবং রংপুরের অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
রংপুরের দীর্ঘদিনের উন্নয়ন বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরে সামু বলেন, “৪২ বছর ধরে একটি দল রংপুর শাসন করছে। কিন্তু রংপুরবাসী তাদের প্রাপ্য সুবিধা পায়নি। গত বছর সিটি কর্পোরেশনকে এক টাকাও বরাদ্দ দেওয়া হয়নি—এটা চরম বৈষম্য।
তিনি আরও বলেন, শ্যামাসুন্দরি ঘিরে দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিট ও আইসিইউ সংকট ভয়াবহ; কমপক্ষে তিন শত নতুন সিসিইউ বেড জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন। হৃদরোগ, কিডনি ও অন্যান্য সংকটাপন্ন রোগীদের জন্য শহরের বিভিন্ন প্রান্তে সরকারি সেবা সম্প্রসারণও অত্যন্ত জরুরি। তা নিয়েও কাজ করা হবে।
রংপুরে শহীদ আবু সাঈদসহ কয়েকজন বিএনপি নেতার আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, এত গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলায় আজও কোনো উপদেষ্টা না থাকা রংপুরবাসীর প্রতি বৈষম্যেরই বহিঃপ্রকাশ।
অপপ্রচার ও প্রোপাগান্ডার অভিযোগ এনে সিনিয়র সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সামু বলেন, “ডিএসবি, সিটি এসবি, এনএসআই—কোনো গোয়েন্দা সংস্থা আমার বিরুদ্ধে রিপোর্ট দেয়নি। যারা আজ আমাকে নিয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে তারা হয়তো গোপন কোনো সংগঠনের অংশ।” তিনি অভিযোগ করেন, তার নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করতে একটি গোষ্ঠী সচেষ্ট।
তবে তিনি নিশ্চিত করে বলেন, বিএনপির মূল সংগঠন ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সাময়িক মনঃকষ্টে থাকলেও শেষ পর্যন্ত সবাই ধানের শীষের পক্ষে তার জন্য কাজ করবে।
জাতীয় পার্টির অবস্থান সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে সামু বলেন, “রংপুর একসময় জাতীয় পার্টির ঘাঁটি ছিল। কিন্তু এখন রংপুর ধানের শীষের ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। ভবিষ্যতেও বিএনপি রংপুরে আরও শক্তিশালী হবে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, তিনি কোনো অবৈধ বা অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন না।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন
রংপুর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক নাজমুল আলম নাজু, স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মী, সাংবাদিক ও সুধীজন।


