
নাহিদ ইসলামের ফেসবুক পোস্ট নিচেয় হুবহু তুলে ধরা হলো:
১৯৭১ সালে আমরা একটি ভূখণ্ড পেয়েছিলাম। পেয়েছিলাম লাল-সবুজের পতাকা। কিন্তু সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার—এর যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল, গত ৫৩ বছরে শাসকগোষ্ঠী তা বাস্তবায়ন তো করেইনি, বরং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ব্যবহার করে একদল জনগণের ওপর ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দিয়েছিল।
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান সেই ভয়কে জয় করেছে। চব্বিশ হচ্ছে একাত্তরের ধারাবাহিকতা। একাত্তরের আকাঙ্ক্ষা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার– এগুলোই চব্বিশের বৈষম্যবিরোধী এবং গণতান্ত্রিক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পুনরায় ঘোষিত হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান আমাদের একাত্তরের প্রকৃত চেতনাকে নতুন করে আবিষ্কার করার সুযোগ দিয়েছে।
আমাদের মনে রাখতে হবে, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন মানেই চূড়ান্ত বিজয় নয়। ব্যক্তির পতন হয়েছে, কিন্তু যে কাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে একজন ব্যক্তি স্বৈরাচারী হয়ে ওঠেন, সেই ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো এখনো ভেঙে ফেলা সম্ভব হয়নি।
একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন এবং চব্বিশের শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে আমাদের স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্য, বাংলাদেশপন্থার জন্য কাজ করতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের রাজপথের সংগ্রাম এবং বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই—দুটোই চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং আত্মমর্যাদা রক্ষার প্রশ্নে আমাদেরকে থাকতে হবে সতর্ক এবং আপসহীন।
একাত্তরের বীর শহীদ এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণ করে বিভাজন নয়, ঐক্যের বাংলাদেশ গড়তে হবে। পুরনো জঞ্জাল সাফ করে আগামীর প্রজন্মের জন্য আমাদের বানাতে হবে একটি নিরাপদ ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র।
সবাইকে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
ইনকিলাব জিন্দাবাদ।



