
বিশাল রহমান, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :- ঠাকুরগাঁও -১ আসনে জামাত প্রার্থী ইসলামি ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বেগম খালেদা জিয়ার জানাযায় না গিয়ে নির্বাচনী এলাকায় গণ সংযোগে ব্যস্ত থাকায়হ ঠাকুরগাঁও -১ নির্বাচনী এলাকার নেটিজেনদের মাঝে সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে।
ঠাকুরগাঁও নেটপাড়ায় এ নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে চলছে বাকযুদ্ধ। বছরের শেষের এই শোকাবহ বেদনাদায়ক দিনে ঠাকুরগাঁও-১ আসনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের প্রতিপক্ষ জামাতের প্রার্থী ইসলামি ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলোয়ার হোসেন গতকাল তাঁর নির্বাচনী এলাকায় গণ সংযোগ চালানোর কারণে এই বাক যুদ্ধের সূত্রপাত। ঠাকুরগাঁও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো: কায়েসের সাথে ফোনে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, জামাত প্রার্থীকে অকৃতজ্ঞ আখ্যা দিয়ে বলেন, আজকের এই দিনে তিনি নির্বাচনী গণসংযোগ না করলেও পারতেন। সদর উপজেলা ছাত্রদল নেতা সাজু তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় একই বিষয়ে স্ট্যাটাস দিয়ে আজকের দিনে জামাত প্রার্থীর নির্বাচনী গণসংযোগের নিন্দা জানান।চট্টগ্রামে কর্মরত ঠাকুরগাঁওয়ের সাংবাদিক ও দৈনিক ঝড়ের সম্পাদক শাওন আমিনও তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ার পেজে জামাত প্রার্থী দেলোয়ারের নির্বাচনী গণসংযোগে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
এ বিষয় নিয়ে বিএনপি সমর্থকদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখে জামাত প্রার্থী দেলোয়ারের মিডিয়া সেল নামক একটি পেজ থেকে সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে জামাত প্রার্থীর ইউনিয়ন জামাত অফিসে দোয়া করার একটি ছবি পোস্ট করে দাবি করা হয় যে,তিনি বেগম খালেদা জিয়ার রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া করেছেন। এ বিষয়ে জেলা জামাতের এক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিনিধিকে বলেন, “জানাযার নামাজ ফরজে কেফায়া, তাদের প্রার্থী খালেদা জিয়ার রুহের মাগফেরাত কামনা করে রায়পুর ইউনিয়নে দলের নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে দোয়া করেছেন।” গতকাল সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া সোশ্যাল মিডিয়ার ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন পেজ ও প্রোফাইলে এ বিষয়ে নানামুখি বাকযুদ্ধ এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখ্য যে, ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১৮ দলের এক জনসভায় ইসলামি ছাত্র শিবিরের সেসময়কার কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের মুক্তি দাবি করার পর সরকারের নানা মহল থেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়।
পরদিন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ দেশব্যাপী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া কর্তৃক দেলোয়ারের মুক্তি দাবি করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। সেসময়ের বিভিন্ন পত্রিকার আর্কাইভ থেকে জানা যায় যে,ইসলামি ছাত্র শিবিরের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনকে ২০১৩ সালে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে রাজধানীর শ্যামলী এলাকা থেকে আটক করে ডিবি পুলিশ। আটকের পর দিনের পর দিন রিমান্ডে অকথ্য নির্যাতন চালাতে থাকে পুলিশ।
২৫ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেগম খালেদা জিয়া দেলোয়ারের মুক্তি দাবি করে বক্তব্য দিলে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে দেলোয়ারকে জংগী আখ্যা দিয়ে খালেদা জিয়ার বক্তব্যের নিন্দা জানানো হয়।বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু শোকের দিনে নির্বাচনী গণসংযোগের বিষয়ে জামাত প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনের প্রতিক্রিয়া জানতে আজ বেশ কয়েকবার ফোনে চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু শোকের এই দিনে জামাত প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনের নির্বাচনী গণসংযোগের বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার বাকযুদ্ধে নেটিজেনদের মধ্যে নানামুখী আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।


