শিরোনাম
এইচএসসি ফল প্রকাশ: তেজগাঁও কলেজে পাশের হার ৬৮.৫০ শতাংশ তেজগাঁও কলেজে ফুটপাত দখলমুক্ত অভিযানের তিনদিন পরই ফের দখল, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ সার সংকট কৃষকদের নায্য দাবি নিয়ে এই ঐক্যবদ্ধ হয়ে ডিসি অফিস ঘেরাও করুন ঠাকুরগাঁওয়ে : মির্জা ফখরুল অবশেষে ৩৩ বছর পর গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য উম্মুক্ত হলো রংপুর প্রেসক্লাব রংপুর শ্রম দপ্তরে সহকারীর রাজত্ব: আদালতে মামলার অজুহাতে ঘুষ বাণিজ্য এপিপি আরিফের বিরুদ্ধে নারী সাংবাদিককে হেনস্থা ও হুমকির অভিযোগ কুমিল্লা শহর যানজট মুক্ত করতে ফুটপাত উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে কুমিল্লা জেলা পুলিশ কামরাঙ্গীচর থানা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত,আহব্বায়ক মোহাম্মাদ নাঈম কুমিল্লায় বিদেশি অস্ত্র ও মাদকসহ ২ যুবক গ্রেফতার রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ভূল করে আবারও ফ্যাসিস্টদের কবলে পড়া যাবে না : মির্জা ফখরুল

এইচএসসি ফল প্রকাশ: তেজগাঁও কলেজে পাশের হার ৬৮.৫০ শতাংশ

S M Rashed Hassan

আজিজুল ইসলাম যুবরাজঃ
২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় সারা দেশে গড় পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় ১৮.৯৫ শতাংশ কম।
এদিকে উচ্চ মাধ্যমিক-২০২৫ সালের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। তেজগাঁও কলেজের ফলাফল অনুযায়ী, এ বছর মোট ৬০১ জন পরীক্ষার্থী ফরম পূরণ করলেও পরীক্ষায় অংশ নেয় ৬০০ জন। তাদের মধ্যে ৪১১ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ১৯০ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। পাশের হার দাঁড়িয়েছে ৬৮.৫০ শতাংশ।
এবারের ফলাফলে কলেজ থেকে ৪ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
বিভাগভিত্তিক ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়—
বিজ্ঞান বিভাগে: ১৮৪ জন পাশ করেছে, অকৃতকার্য ৬৬ জন।
ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে: ৮৭ জন পাশ করেছে, অকৃতকার্য ৪২ জন।
মানবিক বিভাগে: ১৪০ জন পাশ করেছে, অকৃতকার্য ৮২ জন।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিজ্ঞান বিভাগে পাশের হার তুলনামূলকভাবে বেশি হলেও মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে উন্নতির সুযোগ রয়েছে।
এইচএসসির এমন ফলাফল নিয়ে মন্তব্য প্রকাশ করেছেন, তেজগাঁও কলেজের বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদের মতে তেজগাঁও কলেজে শিক্ষার মান, পরিবেশসহ শিক্ষণ পদ্ধতির অকার্যকারিতা, প্রশাসনিক উদাসীনতা এবং পাঠদানের মানহীনতার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে।
তেজগাঁও কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি নাজমুল হোসেন বলেন, একটা কলেজে ১৫০০ টাকা বেতন দেওয়ার পর প্রায় ৩২ শতাংশ শিক্ষার্থী ফেল। এটা খুবই কষ্টদায়ক। অথচ তেজগাঁও কলেজের পাশেই বিজ্ঞান কলেজ। ওদের রেজাল্ট কত ভালো।

তেজগাঁও কলেজের প্রশাসন বোধহয় কখনোই ইন্টারমিডিয়েট নিয়ে সেইভাবে চিন্তা করে নাই। ওদের শিক্ষার মান নিশ্চিত, পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য। এত বাজে রেজাল্ট করার পর কলেজ প্রশাসনের উচিত জবাবদিহিতা করা। কেন এত খারাপ রেজাল্ট আসলো। ৫ই আগষ্টের আগে দেখেছি ছোট আবেগপ্রবণ একাদশ দ্বাদশ এর শিক্ষার্থীদের দিয়ে অপরাজনীতি। এদেরকে গ্রুপিংয়ের মাধ্যমে এদের সুন্দর জীবন ধ্বংস করার মাধ্যম। এগুলো বন্ধ হোক তেজগাঁও কলেজে। ইন্টারমিডিয়েটের শিক্ষার্থীদের আরও ভালো রেজাল্ট কিভাবে হবে। সেটা নিয়ে প্রশাসনের উচিত এখনই চিন্তা করা।
তেজগাঁও কলেজ ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আসিফ হোসাইন বলেন, এই ফলাফল কেবল শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত ব্যর্থতা নয়, বরং শিক্ষণ পদ্ধতির অকার্যকারিতা, প্রশাসনিক উদাসীনতা এবং পাঠদানের মানহীনতার প্রতিচ্ছবি। আমরা লক্ষ্য করছি, কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ফি আদায় করছে যা অন্যান্য কলেজের তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু সেই তুলনায় মানসম্মত শিক্ষা, নিয়মিত ক্লাস এবং প্রয়োজনীয় একাডেমিক সহায়তা নিশ্চিত করতে তারা ব্যর্থ হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা যথাযথ গাইডলাইন, পর্যাপ্ত ক্লাস ও সহায়ক শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এর ফলেই শত শত পরিশ্রমী শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ আজ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের ভাগ্য নিয়ে উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার জায়গা কোথাও নেই। শিক্ষকদের উচিত হবে নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকা, পাঠদানের মান উন্নত করা এবং দুর্বল শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে বিশেষ সহায়তা প্রদান করা। একই সঙ্গে, শিক্ষার মানোন্নয়নে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ, ক্লাস মনিটরিং, শিক্ষকদের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন এবং শিক্ষার্থীদের একাডেমিক অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের জন্য পৃথক কমিটি গঠন করা জরুরি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপরোক্ত ফলাফল এবং বেতন কাঠামো নিয়ে তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মতামত এবং ক্ষোভ দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় একযোগে দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডসহ মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এ বছর এইচএসসিতে পাশের হার ৫৮ দশমিক ৮৩। এছাড়া জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন। যেখানে গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন শিক্ষার্থী। এই হিসাবে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৭৬ হাজার ৮১৪ জন।
অন্যদিকে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ৩৪৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শতভাগ শিক্ষার্থী পাশ করেছেন। যেখানে গত বছর এইচএসসিতে ১ হাজার ৩৮৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শতভাগ শিক্ষার্থী পাশ করেছিল। এছাড়া চলতি বছর ২০২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কেউ পাশ করেনি। যেখানে গত বছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ৬৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজনও পাশ করেনি।

Leave a Reply