নিজস্ব প্রতিবেদক :- ঢাকার দক্ষিণাঞ্চলের দোহারের মুকসুদপুরের রেজাউল করিম। পেশায় একজন রিকন্ডিশন গাড়ির ব্যবসায়ী। ২০১৩ সালে দুটি পৃথক দলিলে স্ববপরিবারে বসবাস করার উদ্দেশ্যে ১৩ শতাংশ জমি ক্রয় করেন চন্দ্রিমা মডেল টাউন হাউজিংয়ে। কালক্ষেপণে সেখানে তিনটি দোকান এবং একটি ফ্ল্যাট নির্মাণ করেন। এর মধ্যে একটি ফ্ল্যাট মাসিক ১৫০০ টাকার চুক্তিতে ভাড়া দেন জনৈক কামরুল ইসলাম নামক এক ব্যক্তিকে। কিন্তু ভাড়াটিয়া কামরুল রেজাউলের সম্পত্তি দখলে নামে নতুন এক মিশনে।
পরে ২০২৫সালে আদালতে রেজাউল করিম কামরুলের বিরুদ্ধে দখল বুঝে পাওয়ার মামলা করেন, যেখানে আদালত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে রেজাউল করিমের পক্ষে রায় দেয়। তবে, আদালতের রায় পরেও কামরুল জারি রাখে তার এই অব্যাহত দখল কাণ্ড। “উলটো জমির মালিক রেজাউলকে ফাঁসাতে তৈরি করে নতুন নাটক।
গেল ১৭ অক্টোবর  ঘটানো হয়  নতুন এক সুপরিকল্পিত ঘটনা। রেজাউল করিমের জনৈক অপর এক ভড়াটিয়ার ওপর কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুর চালায়। লুট করা হয় মালামাল।
১৮ অক্টোবর সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় উলটো রেজাউল করিম ও তার পরিবারকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে কামরুলের স্ত্রী মাকসুদা আক্তার মুক্তা। যার নম্বর-৫৯। এ যেন জোর যার মুল্লুক তার। এই প্রবাদ বাক্যটির বাস্তব রূপ।
মামলাটির বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় মামলার বাদী মাকসুদা আক্তারের সাথে। তিনি মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, রেজাউল দিল্লি থাক আর অন্য জায়গায় থাক। সে তো মূল হোতা। মূল হোতা কোনোদিন সামনে থাকে। ও আগে এখনকার কেয়ারটেকার ছিলেন, এখন জাল জালিয়াতির করে ভুয়া কাগজ বানিয়ে এগুলো দখল করার চেষ্টা করছে। ওর বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলা রয়েছে।
মিথ্যা মামলা কিনা তা জানি না। এটতো বাদীর বিষয়? দুই পক্ষের লক্ষ্যই ছিল দখল কর। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই পাওয়া যায়। মুঠোফোনে ৩১(অক্টোবর) দুপুরে এমনটাই জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক আব্দুল মোমিন।
হামলার সময় জমির মালিক রেজাউল করিম কর্ণফুলি টানেল যোগে পরিবারসহ
অবকাশ যাপনে কক্সবাজারে  অবস্থান করছিলেন। সেখানে তিনি কলাতলী বিচ এলাকায় হোটেল ইকো রিসোর্ট নামে একটি রিসোটে রাত্রী যাপন করেন।
ইতোমধ্যে কর্ণফুলি টানেল যোগে আসা যাওয়ার দুটো টোকেন এবং  ওই রিসোটটির একটি বিল ভাউচার এসে পৌঁছেছে এই প্রতিবেদকের হাতে।
কিন্তু, এর আগে ১৩/১০/২০২৫ সালে জমির মালিক রেজাউল করিম একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন কামরুল হাসান ও মাকসুদা আক্তার মুক্তাসহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে।
এদিকে ভুক্তভোগী রেজাউল করিম বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, কামরুল ও তার পরিবার গণঅভ্যুস্থানে ছাত্রজনতার আন্দোলন দমাতে সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছেন। সাবেক পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানের অস্থাভাজন ছিলেন। কামরুল তার আপন শাশুড়ি বোনের সম্পত্তি ও দখল করেছেন। তৎকালীন সময়ে দোহার প্রেসক্লাবের ট্যাগে চালিয়েছে আরো দখল কাণ্ড।এবং খালা শাশুড়ির জায়গা দখল করেছেন তিনি।
এই ঘটনার পর এখন প্রশ্ন উঠেছে, এমন অব্যাহত দখল ও চক্রের পেছনে কে বা কারা রয়েছে এবং কীভাবে দখল পুনরুদ্ধারের জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কামরুল চক্রের এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে পুরো চন্দ্রিমা মডেল টাউন জুড়ে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে কথা হয় কামরুল হাসানের সাথে। তিনি এই প্রতিবেদককে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে মুঠোফোনে জানান, রেজাউল করিম সুজন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে আমার বাসার লবণের বাটিটি পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে কোর্টে আমি একাধিক মামলার করেও কোনো প্রতিকার পাইনি। এগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট। জাল জালিয়াতি করে পাঁয়তারা করছেন। তিনি এখানকার কেয়ারটেকার ছিলেন। আমার শ্বশুরকে তিনি এই জায়গাটি কিনে দেন। ২০১৩ সালে একটি নকল কাগজ বানান। ঐ সময় থেকেই তিনি জমিটি দখল করার পাঁয়তারা করছেন।
দ্রুত দখলদার জনৈক কামরুলের বিরুদ্ধে নেওয়া হোক আইনগত ব্যবস্থা, এমনটাই দাবি স্থানীয় সচেতন মহলের।
 
								 
															

