বিদ্যুৎ চন্দ্র বর্মন, (নিজস্ব) প্রতিবেদক:- মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলায় পরকীয়ার জালে জড়িয়ে এক তরুণীর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর ২০২৫ ইং) দিবাগত রাতে উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের কাকালদি গ্রামের ইসমাইল হাওলাদারের মেয়ে শিউলী আক্তার (৩৮) নিজ বাড়ির টিনশেড ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিউলীর সঙ্গে পাশের গ্রাম পশ্চিম কাকালদির সৌরভ ভাওয়াল নামের এক যুবকের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সৌরভের পিতা ঝন্টু ভাওয়াল।
এলাকাবাসীর দাবি, সৌরভ হিন্দু ধর্মাবলম্বী হলেও নিজের ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে মুসলিম মেয়ে শিউলীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিভিন্ন প্রলোভন ও প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে শিউলীকে আবেগের ফাঁদে ফেলে ছিলেন তিনি। সম্প্রতি শিউলী জানতে পারেন যে সৌরভ আসলে হিন্দু ধর্মাবলম্বী এবং তার দেওয়া বিয়ের প্রতিশ্রুতি ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ ঘটনায় তিনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন। মঙ্গলবার বিকেলে পরিবারের সদস্যরা বাইরে থাকার সুযোগে নিজের ঘরের আড়ায় ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেন শিউলী। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে সিরাজদিখান থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। শিউলীর মা বিলকিস বেগম জানান আমরা থানায় গিয়ে মামলা করতে চাইলে ওসি অভিযোগ নিতে ও রাজি হননি। ওসি বলেন, “মেডিকেল রিপোর্ট হাতে আসার পর বিষয়টি পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” পরিবারের দাবি, অন্তত অপমৃত্যুর একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে অভিযোগটি নথিভুক্ত করা যেত।
সিরাজদিখান থানার ওসি (তদন্ত) বলেন, ঘটনাটি প্রাথমিক ভাবে আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। তবে প্রেমঘটিত প্রতারণা বা অন্য কোনো কারণ জড়িত আছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”শিউলীর মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোক ও ক্ষোভের ছায়া। স্থানীয়দের দাবি, সৌরভ ভাওয়াল ধর্ম গোপন করে শিউলী আক্তারকে প্রতারণা করেছেন, আর তারই পরিণতিতে এক তরুণীকে অকালে প্রাণ দিতে হলো।
এবিষয়ে সৌরভ ও তার বাবার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে কোন ভাবেই সম্ভব হয়নি তাই তাদের বক্তব্যে নেওয়া সম্ভব হয়নি। এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন—ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।


