
শিল্পী আক্তার রংপুর ব্যুরো :- গণপূর্ত বিভাগের অধীন রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভবন সংস্কার সহ বিভিন্ন ভবন নির্মাণের নামে চলছে চরম অনিয়ম দুর্নীতি। পুরাতন পাইপ ধুয়ে পরিষ্কার করে নতুন বলে চালিয়ে দিয়ে, পুরাতন অবকাঠামোকে মেরামত বলে চালিয়ে দেবার নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে, হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে অক্সিজেন সরবরাহের প্রধান স্থাপনাটির সাথে বিশাল গর্ত খুঁড়ে সেখানকার পুরাতন ইট প্রকাশ্যই বহন করে সামনেই নতুন ভবনে নতুন ইট বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেই সাথে বিশাল গর্ত খুঁড়ে রাখার কারণে হাসপাতালের অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে। ফলে যে কোনো সময় শত শত রোগীর প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন হাসপাতালের চিকিৎসক, রোগী ও তাদের স্বজনরা।
সরেজমিনে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে গণপূর্ত বিভাগের লুটপাটের চিত্র।
হাসপাতাল ভবনটি অনেক পুরাতন হওয়ায় প্রতি বছর ভবন মেরামত ও পুনঃ নির্মাণের নামে চলছে অভাবনীয় কর্মকাণ্ড। গণপূর্ত বিভাগ, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতালের বিভিন্ন ভবনসহ সব ধরনের কাজ দেখভাল করার জন্য রয়েছে আলাদা প্রকৌশল দপ্তর।
সেখানে এস ডি ই সহ বিভিন্ন পদ মর্যাদার কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। হাসপাতাল ভবনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে স্যানিটারি ল্যাট্রিন গুলোর অবস্থা শোচনীয়, সেগুলো ব্যবহার অনুপোযোগী। স্যানিটারি ল্যাট্রিনের পুরাতন পাইপ ধুয়ে মুছে নতুন করে লাগানো দেখানো হচ্ছে। হাসপাতালের ড্রেনেজ ব্যবস্থা এতটাই নাজুক যে পাইপ দিয়ে ময়লা অনবরত বের হয়। ফলে হাসপাতালের ল্যাট্রিন ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে থাকে সার্ব ক্ষণিক ভাবে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
মেডিসিন ওয়ার্ড গুলোতে দেখা গেছে ল্যাট্রিনের ময়লা ভাসছে। কুড়িগ্রাম থেকে ভর্তি হওয়া আফরোজা বেগম জানালেন, এখানকার ল্যাট্রিন ব্যবহার অনুপোযোগী। একই কথা বললেন রংপুরের সদর উপজেলার মমিনপুরের আকলিমা বেগম সহ অনেকেই। একই অবস্থা গাইনি আর সার্জিক্যাল ওয়ার্ড সহ সব ওর্য়াড গুলোতে। কর্তব্যরত দুই ইন্টার্ন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,গণপূর্ত বিভাগ ভবন সংস্কারের নামে কোটি কোটি টাকা লুট করে নিচ্ছে। হাসপাতালের ভবন সংস্কারের নামে একই কাজ প্রতিবছর বার বার মেরামত দেখানো হচ্ছে। সিলিং ফ্যান আর এসি গুলো পরিবর্তনের নামে পুরাতন গুলো একটু ঠিক করে নতুন বলে চালিয়ে দিচ্ছে। হাসপাতালের ড্রেনেজ ব্যবস্থা কখনই ভালো করা হয়নি অথচ প্রতিবছর মেরামত আর পুনঃ নির্মাণ দেখানো হয়। হাসপাতালের ভবনের পেছনে, এমনকি নতুন ভবনের সামনে ড্রেনেজ ব্যবস্থা অচল হওয়ার পরেও সচল করার কোনো উদ্যোগ নেই গণপূর্ত বিভাগের।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের একজন উপপরিচালক বলেন,গণপূর্ত কি কাজ করে আমরা জানিনা। তারা বলেও না কোন কাজ করে সেটা আমাদের জানা নেই। প্রতি অর্থ বছরে কত টাকা বরাদ্দ আসে সেই টাকা কীভাবেই কোন খাতে ব্যয় হচ্ছে সেটা খতিয়ে দেখা উচিত।
সার্বিক বিষয়ে জানতে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত এস ডি ২ সাফি মণ্ডলের সাথে তার মোবাইল ফোনে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাকিউল আলমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কাজ কর্ম দেখভাল করার জন্য আলাদা অফিস এবং এসডি পদমর্যাদার কর্মকর্তা আছেন। সেখানে কোনো অনিয়ম হলে আমরা তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেবো বলে জানান।



