
অনলাইন ডেস্ক :- ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় মূল সন্দেহভাজন হিসেবে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ক্যাডার ফয়সাল করিম মাসুদের (ছদ্মনাম দাউদ বিন ফয়সাল) নাম উঠে এসেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তার রাজনৈতিক তৎপরতা ও সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেন তদন্ত করছে।
সূত্র জানায়, ফয়সাল ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও আদাবর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। জুলাই বিপ্লবের পর নিষিদ্ধ সংগঠনের পক্ষে ঝটিকা মিছিল ও গোপন বৈঠকে তিনি সক্রিয় ছিলেন। হামলার কয়েক দিন আগে একটি অনুষ্ঠানে হাদির পাশেই তাকে বসতে দেখা যায়।
সূত্র জানায়, তার পরিবারও আওয়ামী রাজনীতিতে জড়িত। যদিও তার বাবা একজন ছোট ব্যবসায়ী, তবে পরিবারের এই দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা তাকে এবং পরিবারকে মোহাম্মদপুর এলাকায় প্রভাব বিস্তারে ব্যাপকভাবে সাহায্য করেছে। হামলার ঘটনার পর পরিবারের দুই সদস্যকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
গোয়েন্দা তথ্য বলছে, হাদির ওপর হামলার প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো, জুলাই বিপ্লবের পর ফয়সালের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিপুল অঙ্কের লেনদেন। তার ব্যাংক হিসাবগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, স্বল্প সময়ে বড় অঙ্কের টাকা জমা ও উত্তোলন হয়েছে। এই লেনদেনের একটি অংশ এসেছে বিদেশ থেকে। দেশের ভেতর থেকেও বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তার অ্যাকাউন্টে অর্থ এসেছে। এসব অর্থ বৈধ চ্যানেলে এসেছে কিনা? কারা এই অর্থ দিয়েছেন এবং কী উদ্দেশ্যে দিয়েছেন তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। বিদেশে অবস্থানরত কিছু ব্যক্তির সঙ্গে ফয়সালের নিয়মিত আর্থিক যোগাযোগের তথ্যও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ভারতে পলাতক কামালের কাছ থেকে অর্থ পাওয়ার তথ্য বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।এসব অর্থের উৎস ও উদ্দেশ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সরকার তাকে গ্রেপ্তারে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
ফয়সাল ‘অ্যাপল সফট আইটি’ নামে একটি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি দুবছর আগে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসেরও (বেসিস) সদস্য হন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ‘আমরা প্রাইম সাসপেক্টকে খুঁজছি। জনগণের সহযোগিতা চাই।’
হাদির ওপর হামলার ঘটনা ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ ও প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।



