
অনলাইন ডেস্ক :- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (ব্রাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে তৈরি হয়েছে চরম অনিশ্চয়তা। বারবার তফসিল পরিবর্তন এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারদের একের পর এক পদত্যাগের ফলে নির্বাচন প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ে ভোটগ্রহণের দাবিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলীর দ্বারস্থ হয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং দ্রুত নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম সচল করার দাবি জানান।
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এস এম আশিকুর রহমান জানান, চতুর্থ তফসিল অনুযায়ী আগামী ২১ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সেই লক্ষ্যেই কাল (বুধবার) খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের কথা রয়েছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন—আমাদের স্পষ্ট দাবি, ২১ জানুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে। অন্যথায় ক্যাম্পাস খোলার পর ১০ জানুয়ারি থেকে আমরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনে নামব।
শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী জানান, নির্বাচন প্রক্রিয়া পুনরায় সচল করতে তিনি আজই নির্বাচন কমিশনারদের চিঠি দেবেন। দ্রুত কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনাও প্রদান করবেন বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
তবে কমিশন গঠনের একদিন পরই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ নতুন করে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করে।
পরবর্তীতে ১১ নভেম্বর উপাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ১১৭তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শাহজামানকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে কমিশন পুনর্গঠন করা হয়। কমিশন পুনর্গঠন হলেও দীর্ঘ সময় ধরে তাদের কার্যক্রমে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ১৮ নভেম্বর প্রথম দফায় ২৯ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণের ঘোষণা দিয়ে ব্রাকসুর প্রথম তফসিল প্রকাশ করা হয়। তবে মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ভোটগ্রহণের তারিখ এগিয়ে এনে ২৪ ডিসেম্বর নির্ধারণ করে দ্বিতীয় তফসিল ঘোষণা করা হয়। এ সময় ২৫ নভেম্বর পুনর্গঠিত কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. শাহজামান প্রথমবার পদত্যাগপত্র জমা দিলেও প্রশাসনের অনুরোধে দায়িত্বে বহাল থাকেন।
তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীরা মনোনয়ন ফরম উত্তোলন, ডোপ টেস্টসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করলেও মনোনয়ন জমাদানের শেষ দিন ৯ ডিসেম্বর কোনো পূর্ব নোটিশ ছাড়াই নির্বাচন কমিশন কার্যালয় বন্ধ পাওয়া যায়। এতে চরম ভোগান্তি ও হতাশায় পড়েন প্রার্থীরা।
পরদিন ১০ ডিসেম্বর রাতে আবারও তফসিল পরিবর্তন করে ভোটগ্রহণের তারিখ পিছিয়ে আগামী বছরের ২১ জানুয়ারি নির্ধারণ করে চতুর্থ তফসিল ঘোষণা করা হয়।
এর পরদিন ১১ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. শাহজামান দ্বিতীয়বারের মতো পদত্যাগপত্র জমা দেন।



