প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ২৮, ২০২৫, ১:২৪ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ ডিসেম্বর ২৭, ২০২৫, ৮:১৫ অপরাহ্ণ
কেরানীগঞ্জে মাদরাসায় বিস্ফোরণের রহস্য উদঘাটন
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদরাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান।
হেফাজতে নেওয়া হয়েছে মাদরাসা পরিচালনা করা আল আমিনের স্ত্রী আসিয়া, আসিয়ার বড় ভাইয়ের স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার এবং আসমানি খাতুনকে।
মিজানুর রহমান বলেন, ওখানে বেশ কিছু রাসায়নিক দ্রব্য মজুত ছিল। ঘটনাস্থল থেকে আরও কিছু বিস্ফোরক জাতীয় বস্তু উদ্ধার করা হয়েছে। তাৎক্ষণিক পুলিশের বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট, অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট এবং সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটকে খবর পাঠাই। ব্যাপক তল্লাশির পর ল্যাপটপ, মনিটর, রাসায়নিক মজুত, ড্রামের মধ্যে লিকুইড রাসায়নিক, চারটি ককটেল সদৃশ বস্তু জব্দ করা হয়েছে।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মাদরাসার পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন আল আমিন এবং তার স্ত্রী আসিয়া। বিল্ডিংটি ভাড়া নিয়ে ২০২২ সাল থেকে মাদরাসা পরিচালনা করে আসছিলেন। চার কক্ষের দুটিতে মাদরাসার কক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হতো। একটিতে তারা থাকতেন, অপরটি বসার কক্ষ।
বিস্ফোরণে আসিয়া এবং তার তিন সন্তান আহত হন। এরপর আল আমিন তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে আদ-দ্বীন হাসপাতালে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়। এরপর থেকেই আল আমিন পলাতক।
মিজানুর রহমান বলেন, আমরা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশি অভিযান শুরু করি। এই অভিযানে একাধিক টিম কাজ করছে। একপর্যায়ে আমরা শেখ আল আমিনের স্ত্রী আসিয়াকে হেফাজতে নেই। পাশাপাশি আসিয়ার বড় ভাইয়ের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেই। তাদের ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যমতে, বাসাবো থেকে আসমানি খাতুন নামে একজনকে হেফাজতে নিয়েছি। বর্তমানে তিনজন হেফাজতে আছেন। তাদের গ্রেপ্তার হিসেবে দেখাচ্ছি।
বিস্ফোরণের কারণ কী? আল আমিনের কোনো উগ্র সংগঠনের সঙ্গে যোগসাজশ আছে কি-না? এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, আল আমিনের নামে ঢাকার আশেপাশে কয়েকটি মামলা আছে। আমরা তদন্ত চালু রেখেছি। জানা গেছে, দুইবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, জেলেও ছিলেন। ২০২৩ সালে জামিনে এসে অটোরিকশা চালিয়েছেন কিছুদিন। বর্তমানে উবার চালাতেন।
তিনি আরও বলেন, ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছিল। তাদের কাছ থেকে এখনো মতামত পাইনি। ওখানে যেহেতু রাসায়নিক এবং ককটেল ছিল, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এখানে রাসায়নিক ক্যামিকেলের রিয়েকশন অথবা যে বিস্ফোরক দ্রব্য পাওয়া গেছে, এর কোনো একটার রিয়েকশনের কারণে প্রকাণ্ড বিস্ফোরণ ঘটেছে।
এটি কোনো নাশকতার অংশ ছিল কি-না? এমন প্রশ্নের জবাবে মিজানুর রহমান বলেন, আমরা এখনই ঠিক এভাবে বলছি না। এখনো মামলা রেকর্ড হয়নি। রেকর্ড হলে বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানাতে পারবো।
উল্লেখ্য, এর আগে বিস্ফোরণে মাদরাসার একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে যায়। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকার উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসার একতলা ভবনে এ বিস্ফোরণ ঘটে।
প্রধান সম্পাদক : জুয়েল খন্দকার
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : এস এম রাশেদ হাসান
নির্বাহী সম্পাদক : গাজী ওয়ালিদ আশরাফ সামী
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয় : ১০/৩, টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল ঢাকা-১০০০
হট-লাইন নাম্বার : ০১৯৮৮৬৬৩৭৮২, ০১৯৬৭৯৯৯৭৬৬.
Copyright © 2025 দেশপত্র. All rights reserved.