আলী আজগর সোনা:- বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। প্রিয় সম্পাদক ও সাংবাদিক বন্ধুরা আচ্ছালামুয়ালাইকুম, সবাইকে আমাদের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। আজ আপনাদের সম্মুখে আমি কিছু বিষয় উপস্থাপন করছি। আমি চুয়াডাঙ্গা ২ আসন থেকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। আমার জনপ্রিয়তা, সাধারণ মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকা, ব্যবসা বাণিজ্যে উন্নতি, আমার সম্পাদনা ও প্রকাশনায় তিলি তিল করে গড়ে তোলা দৈনিক আমার সংবাদ ও ডেইলি পোস্ট পত্রিকা ২টি প্রথম সারির ১০টি পত্রিকার মধ্যে স্থান করে নেয়া। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাওয়া, চুয়াডাঙ্গা ২ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে থাকা। ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী কুড়ুলগাছি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হওয়া। একাধিক বার স্বর্ণপদক প্রাপ্ত কুড়ুলগাছি আদর্শ কৃষক সমবায় সমিতির প্রধান উপদেষ্টা হওয়া সহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত হওয়া। বিভিন্ন কল্যাণমূখী কাজের সাথে নিজেকে উজার করে দিয়ে পথ চলা শুরু করি, ঠিক তখন থেকেই একটি দুষ্ট চক্রের লোকজন আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার খেলায় লিপ্ত হলেন।
ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার কথিত সম্পাদক নিজে পর্দার আড়ালে থেকে একটি দাগী চোর বাবুর আলীকে দিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ। বাবুর আলীর স্ত্রীকে দিয়ে আমার নামে ধর্ষনের মামলা, বাবুর আলীর চতুর্থ শ্রেণী পাশ ছেলে শিমুল রেজাকে দিয়ে অপহরণ মামলা দায়ের করিয়েছে। অথচ শিমুল রেজা প্রকাশ্যে আমার বিরুদ্ধে দর্শনা প্রেসক্লাবের সামনে, জনসম্মুখে মানববন্ধন করেছে, বক্তব্য দিয়েছে, যার ভিডিও সাংবাদিক সহ বিভিন্ন মহলের কাছে আছে। তাহলে দামুড়হুদা থানায় কি ভাবে আমার নামে অপহরণ মামলা হলো, যা আমার বোধগম্য নয়। দর্শনা ছাত্রলীগের নেতা হত্যা মামলার আসামি জামায়াত কর্মী জাকির হোসেন, জামায়াত ইসলামের নেতা সরফরাজ, যুবদলের ক্যাডার মাদক ব্যবসায়ী ও ছিনতাইকারী রানা সহ কিছু মাদকাসক্ত যুবকদের দিয়ে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করলেন।
আমি দর্শনা কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য হওয়ার মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতি শুরু করি, আমার পরিবারের সকলেই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত। উক্ত ষড়যন্ত্রকারীরা অভিযোগ করলেন হাশেম রেজার মৃতঃ বাবা একজন জামায়েত কর্মী ছিলেন। আমরা বংশগত ভাবে মোল্লা গোষ্ঠীর। যাদের বংশের টাইটেল মোল্লা এবং জাতিতে মুসলমান, তাহলে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, রোজা পালন করা মুসলমানদের কাজ। আর এই নামাজ রোজা কি? শুধু জামায়াত ইসলাম রাজনীতির সাথে যুক্তদের। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন বলে আমার বাবাকে জামায়াত ইসলামের কর্মী বানিয়ে দেয়া হলো, ১৯৯২ সালের ভুয়া ২টা জামায়াতের ইয়ানত জামা রশিদ বানিয়ে আওয়ামী দলীয় হাই কমান্ডের কাছে অভিযোগ দাখিল করলেন উক্ত কুচক্রী মহল।
নামে বেনামে আমার ও আমার কর্মী সমর্থকদের নামে মামলা করেই চলেছে। আমার নাবালক দুই ছেলের নামেও তারা মামলা দিয়েছেন। ঢাকা থেকে প্রকাশিত ঐ আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার কথিত সম্পাদকের আপন বড় ভাই কুড়ুলগাছি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে ২০২১ সালে নির্বাচন করেছিলেন। তাদের পরিবারের কেউ কোন দিন আওয়ামীলীগের রাজনীতি করেননি। তারা রাজাকার পরিবারের সদস্য, তারা স্মাগলার, মাদক পাচারকারী, নারী কেলেংকারী সাথে যুক্ত হওয়ার কারণে কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক এবং আওয়ামীলীগ পরিবারের লোকজন তাকে প্রত্যাখ্যান করেন। ভিন্ন পথে কারসাজির মাধ্যমে এবং নেতৃবৃন্দকে ভুল বুঝিয়ে যে ব্যক্তি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন, তার সুস্পষ্ট জবাব তাকে হারিয়ে দিয়ে প্রমাণ দিয়েছিল এলাকার জনগণ। উক্ত নির্বাচনে পাঁচজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর অংশ নিয়েছিলেন কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা ওই কথিত সম্পাদকের বড় ভাই লজ্জাজনক ভোট পেয়ে ৩য় স্থান অধিকার করেছিলেন। নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে ওই কথিত সম্পাদক তার ভাইয়ে পরাজয়ে আমাকে দোষারোপ করেন। তার পর থেকে আমাকে হেই প্রতিপন্ন করার জন্য আবারও উঠেপড়ে লাগেন। সম্মানহানি ও অর্থনৈতিক ক্ষতির চেষ্টা করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২ জুলাই রোজ রোববার সকাল ১২.৩০ মিনিটে মাইকিং করে কুড়ুলগাছি সমবায় সমিতির মিটিং ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে একটি মারামারির সংঘটিত হয়। পূর্বে নির্ধারিত মিটিংয়ে ওই কথিত সম্পাদক প্রধান অতিথি হতে চেয়েছিলেন, যার ফলশ্রুতিতে উক্ত মারামারি সংঘটিত হয়। ওই মারামারিকে কেন্দ্র করেই নারী কেলেংকারি ও ধর্ষণ মামলার আসামি কথিত ঐ সম্পাদক আমার নামে তিনটি মিথ্যা মামলা করিয়েছেন। আমার নামে কথিত এসব মিথ্যা মামলা করে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল এবং আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ও সমাজের কাছে হেয়প্রতিপন্ন করার মানসেই দুষ্টুচক্র এসব অপকর্ম করে চলেছে। এখানেই শেষ নয়, তিনি বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন অধিদপ্তরে ‘হাশেম রেজা’ নামে ভুয়া সার্টিফিকেট তৈরি করে জমা দিয়ে হাশেম রেজাকে বিভিন্নভাবে মানহানি করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এনএসআই, এসবি, পিবিআই, ডিবিসহ বাংলাদেশ পুলিশের তদন্তে এর কোনো সত্যতা না পাওয়ায় তারা আমাকে কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। এছাড়াও তারা আমাকে হত্যার পরিকল্পনাও করেছেন। ঐ কথিত সম্পাদকের ইতিপূর্বে এ সংক্রান্ত একটি অডিও ফাঁস হয়, যেখানে আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে গত ৭ জুলাই শুক্রবার কথিত ওই সম্পাদকের ছেলে মো. মেহেদী হাসান তার ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্ট করেন যে, জনাব হাশেম রেজা, শুনে রাখুন আপনার মতো সাধারণ জনগণের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে আমার বাবা পত্রিকার মালিক হননি। আমার বাবা নিজে তিলে তিলে কষ্ট করে, পরিশ্রম করে পত্রিকা তৈরি করেছেন। আপনি তো অন্যের পত্রিকা কিনে মালিক হয়েছেন।
প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা, তারা নিজেরা সরাসরি আমার কোনো ক্ষতি করতে না পেরে তারা গ্রামের একজন সাজাপ্রাপ্ত চোর বাবুর আলীর সহযোগিতা নেয়। এই বাবুর আলী কথিত সাংবাদিকের ডান হাত হিসেবে পরিচিত। তিনি তক্ষক সাপের ব্যবসা করেন এবং কয়েন-মূর্তির ব্যবসা করেন। এছাড়াও তিনি কুড়ুলগাছি মাঠপাড়ার ইছার গরু, কামারপাড়া বাড়াদির ইমান আলীর মহিষ, ধান্যঘরার সেলিমের গরু ও কুড়ুলগাছির সাইদুরের মহিষ চুরি করে জরিমানাও দিয়েছেন। শিমুল রেজার বাবা বাবুরআলী চোর কুড়ুলগাছি আদর্শ কৃষক সমবায় সমিতির গভীর নলকূপের ট্রান্সফরমার চুরি করেন, যাতে হাজার হাজার কৃষকের ফসল নষ্ট হয়ে যায়। ওই চুরি ধরা পড়লে আমরা তার বিচার করি আর সেই রাগে প্রতিনিয়ত তিনি হাশেম রেজার ক্ষতিসাধনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কথিত ওই সম্পাদকের ডান হাত হিসেবে পরিচিত আশরাফুল হক জাকির- যে সাবেক শিবির নেতা ও ছাত্রলীগ নেতা হত্যামামলার আসামি। এখন ওই কথিত সম্পাদকের বড় ভাই দর্শনা প্রেস ক্লাবের সামনে ‘কুডুলগাছি ইউনিয়নের সন্ত্রাস হাশেম রেজার চাঁদাবাজি, মারামারি, ঘরবাড়ি ভাঙচুর, মানুষ হত্যাচেষ্টা ও বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও ন্যায় বিচারের দাবিতে মানববন্ধন’ এবং ‘সাংবাদিক শিমুল রেজাকে অপহরণ করে হত্যাচেষ্টা করায় হাশেম রেজাকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন’ শিরোনামে দুই ব্যানারে মানববন্ধন করে। কথিত সম্পাদকের বড় ভাইয়ের নির্দেশে এই মানববন্ধনের নেতৃত্ব দেন বিএনপি নেতা মাসুদ রানা নামে এক মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী। ওই মাসুদ রানা বলেছেন, হাশেম রেজা আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে। এ বিষয়ে আমি বলতে চাই, আমার নামে তারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মারামারি, ঘরবাড়ি ভাঙচুর, মানুষ হত্যার চেষ্টা ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের যে বিষয়গুলো উল্লেখ করেছে, আমি অনুরোধ করব তারা যেন উল্লিখিত ‘টাইটেলগুলো’ প্রমাণ করে। আর কথিত সাংবাদিক শিমুল রেজা গ্রামের মানুষদের ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে এক-দুইশ টাকা চাঁদা নিয়ে থাকে এবং তার বাবা একজন দাগী চোর। সার্বিক বিষয় আলোচনা করার জন্য তাকে ডাকা হয়েছিল এবং আমার অফিসে বসে তার সাথে আমরা আলোচনা করেছিলাম। পুলিশ এসে তাকে কোনো হাত, পা বাঁধা অবস্থায় দেখেনি। অথচ সে ৯৯৯-এ ফোন করে বলেছে হাশেম রেজা তাকে হাত বেঁধে অপহরণ করেছেন। সে আরও বলেছে, কার্পাসডাঙ্গা বাজার থেকে তাকে উঠিয়ে আনা হয়েছে। আমি চাই তার ভিডিও ফুটেজ জনগণের সামনে প্রকাশ করা হোক। আমি নাকি তার মোবাইল ফোন চুরি করেছি। আমি বাংলাদেশের দুটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক ও প্রকাশক, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের শিক্ষানবিশ আইনজীবী, ব্যবসায়ী, আওয়ামী লীগের সেন্ট্রাল সাব-কমিটির মেম্বার ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের মন্তব্য মারাত্মক মানহানিকর। এ বিষয়ে আমি সম্মানিত সম্পাদক ও সাংবাদিকদের কাছে অনুরোধ করবো ইতিপূর্বে আমার বিরুদ্ধে যেসব সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে সে বিষয়গুলো যদি আপনারা আমাদের এলাকার জনসাধারণের কাছে গিয়ে সত্য ঘটনা শুনে-বুঝে সংবাদ প্রকাশ করেন, তাহলে জনসাধারণ সত্য ঘটনাটি জানতে পারবে। আর চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার, দামুড়হুদা থানার অফিসার ইনচার্জ ও দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে- বিষয়গুলো তদন্ত করে সঠিক বিচারে সহযোগিতা করার জন্য এবং সম্পাদক হাশেম রেজার বিরুদ্ধে যেসব সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে, সে বিষয়গুলো তদন্ত করে দামুড়হুদা থানায় শিমুল রেজা যে মিথ্যা মামলা করেছে, তার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দ্রুত সঠিক প্রতিবেদন দেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
পরিশেষে আমি আরও বলতে চাই, উপরোক্ত আন্ডারগ্রাউন্ড ঐ পত্রিকাটির সম্পাদক কর্তৃক আমার বিরুদ্ধে এ যাবৎ যেসব মিথ্যা অভিযোগ করেছে তা যদি দুষ্টচক্রটি প্রমাণ করতে পারে, তাহলে এর সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব আমি বহন করবো। এ ব্যাপারে আমরা এলাকাবাসীসহ সাংবাদিক ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।