নিজস্ব প্রতিবেদক : সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামী করে রাজধানীর কোতয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া রিক্সা চালক রিপনের স্ত্রী শামীমা আক্তার ঝুমা।
গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান রিপন।
এঘটনায় গত ২৮ আগস্ট ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে রাজধানীর কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নাম্বার ১১ তারিখ ২৮/৮ /২৪ ইং নিহতের স্ত্রী ঝুমা।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সদরঘাট এলাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন বিভিষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি উল্লেখিত আসামীরা হকিস্টিক, আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সমাবেশে হামলা চালায়। তাদের ছোঁড়া এলোপাথারি গুলিতে রিপন ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে। এ সময় উপস্থিত লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরবর্তীতে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে রিপন ওই দিনই দিবাগত রাত ৩টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
দায়েরকৃত রিপন হত্যা মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ, চট্টগ্রামের রাউজানের সাবেক এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার সাবেক মেয়র এহসানুর হায়দার চৌধুরী বাবুল, কক্সবাজারের মহেশখালীর সাবেক এমপি আশেক উল্লাহ রফিক, রেজাউল করিম বুধ, লোহাগড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এরশাদুর রহমান রিয়াদ, মাকসুদ মিয়া, মো. খাইরুল মিয়া, ছোট মহেশখালীর চেয়ারম্যান রিয়ান শিকদার, আব্দুল মান্নান, নাজিম উদ্দিন মুহুরি, মো. আলাউদ্দিন হাওলাদার, উত্তম দত্ত, অপূর্ব দাস, এমরান হোসেন খান, রিপন বেপারী, কোতয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহাবুদ্দিন জনি, ইমন হোসেন রনি, আরিফ হোসেন ছোটন, শওকত হোসেন, খোকন হাওলাদারসহ আরও দুই/আড়াই’শ অজ্ঞাত ব্যক্তি।
এদিকে, মামলার ২৭ নম্বর আসামী শাহাবুদ্দিন জনির নামে একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়াও সে বিগত সময়ে ছাত্র দলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত পুলিশ সার্জেন্ট ফরহাদ হত্যা মামলারও আসামী। তার বিরুদ্ধে পুরান ঢাকার ইসলামপুর,বাদামতলী,নবাববাড়ীএলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালানোসহ চাঁদাবাজী, জমি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের সুনির্দিষ্ট অভিযোগও রয়েছে বলে জানা যায়। তার রয়েছে নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী। সে জনি বাহিনীর সদস্যরা হচ্ছে খাজা মুন্না, মোয়াজ্জেম শাহ, রহিম, শাহ আলি, জাহাঙ্গীর শিকদার, তারেক হাজি, খাজা সাজান, ইশতিয়াক, বাচ্চা নওয়াব সহ আরো অনেকে। তারা বর্তমানে প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরাঘুরি করছে বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে ১১৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা যায়।