স্টাফ রিপোর্টারঃ শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) এক সদস্যের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তের নাম মো. জসিম উদ্দিন বেপারী (পদবি: সিপাহী), কর্মস্থল বিজিবি ৬০ ব্যাটালিয়ন, সুলতানপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
ভুক্তভোগী স্ত্রী সুনিয়া আক্তার (১৮) অভিযোগ করেছেন, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন আট লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। পরে মোটরসাইকেল কেনার জন্য আরও দুই লাখ টাকা দাবি করা হয়। এ অর্থ না পেয়ে জসিম উদ্দিন নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকেন।
২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি সুনিয়াকে বাবার বাড়িতে ফেলে রেখে যান জসিম উদ্দিন এবং জানিয়ে দেন, যৌতুক না দিলে আর ফিরিয়ে নেবেন না। এ ঘটনায় সুনিয়া সখিপুর থানায় যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় মামলা (সি.আর. মামলা নং ৫২/২০২৫) দায়ের করেন।
পরবর্তীতে গত ২২ মে আদালত থেকে ফেরার পথে জসিম উদ্দিন ও তার সহযোগীরা সুনিয়া ও তার বাবার ওপর হামলা চালান। এতে সুনিয়া মারধরের শিকার হন এবং তার বাবাও গুরুতর আহত হন। এই ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(গ)/৩০ ধারায় ভেদরগঞ্জ আদালতে আরও একটি মামলা (সি.আর. মামলা নং ৬২/২০২৫) দায়ের করা হয়। চিকিৎসা শেষে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল প্রতিবেদনে শারীরিক নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
অভিযোগে বলা হয়, জসিম উদ্দিন প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেন, “আমি সরকারি চাকরি করি, তোরা কিছুই করতে পারবি না। আদালতও আমার কিছু করতে পারবে না।”
আইনজীবী গোবিন্দ প্রামাণিক বলেন, “অভিযুক্ত বিজিবি সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। প্রমাণিত হলে ফৌজদারি শাস্তির পাশাপাশি প্রশাসনিক ব্যবস্থাও নেওয়া উচিত।” এক অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি কর্মকর্তা জানান, বাহিনীর ভাবমূর্তি রক্ষায় নিরপেক্ষ তদন্ত ও কঠোর ব্যবস্থা জরুরি।
প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরাও অভিযোগ করেছেন, টাকার জন্য জসিম উদ্দিন নিয়মিত নির্যাতন চালাতেন এবং অনলাইন জুয়ায় আসক্ত ছিলেন।
ভুক্তভোগী সুনিয়া আক্তার অভিযুক্ত সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিভাগীয় তদন্ত শুরুর পাশাপাশি নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
অভিযুক্ত জসিম উদ্দিন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, বিজিবির মতো একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ বাহিনী কি ন্যায়বিচারের স্বার্থে নিরপেক্ষ তদন্ত চালাবে, নাকি ঘটনাটি ধামাচাপা পড়বে?