ইতিহাসের ভয়াবহতম বন্যা। এ বন্যায় মানুষ মারা গেছেন ৬৯ জন। এর ক্ষতিপূরণ এখনো পর্যন্ত হয়নি। সরকারের পাশাপাশি সারাদেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিককালের ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত, বন্যার শুরু থেকেই নিরলস তথ্য প্রদানসহ সকল প্রকারের কাজকরে যাচ্ছে সাংবাদিকরা এখনো।
দলমত নির্বিশেষে বাংলাদেশের বন্যায় ছাত্র-ছাত্রী, দলীয়, ব্যবসায়ী, মিডিয়া কর্মী, শিশু বাচ্চা সহ সকল শ্রেণিপেশার মানুষের ছিলো অসাধারণ ভূমিকা যা নজিরবিহীন ঘটনার আরেকটি দৃশ্য ২০২৪ এর বন্যার ইতিহাস রচনা করেছেন বাংলাদেশের মানুষ। সেই ইতিহাস এর বিশাল একটা ভূমিকা ছিলো মিডিয়া কর্মীদের যা অসাধারণ নজির বিহীন।
চলমান বন্যায় কুমিল্লায়, ফেনী, নোয়াখালী সাংবাদিকদের অসাধারণ ভূমিকা ছিলো যা আমি আগে কখন দেখা যায়নি। কুমিল্লার সাংবাদিকেরাই এবারে দেখিয়ে দিলেন আমরাও মানব সেবা করতে জানি, মানুষের পাশে থাকতে জানি, তারাও মানব সেবায় প্রতিযোগিতা দিতে জানে। সংবাদ সংগ্রহের পাশাপাশি নিজেরা ত্রান সংগ্রহ করা, কোথায় কোথায় ত্রান লাগবে, কোথায় ত্রানের অনিয়ম হচ্ছে, কোন এলাকায় উদ্ধার অভিযান চলছে, কোন এলাকায় পানি বন্দি মানুষ আটকা পড়ে আছে, সব কিছু তদারকি করেছেন, সাংবাদিকেরা অসাধারণ ভূমিকা রেখছেন।
সাংবাদিকরা কেহ আশ্রয় কেন্দ্র খুলেছিলেন কেহ আবার কোথায় ত্রান পৌছায়নি সেটি খুজে বের করে ত্রান সংগ্রহ করেছেন ঐ স্থানে পৌছে দিয়েছেন, নয়তো সেচ্ছাসেবী সংগঠনকে অবগত করে তাদেরকে ঐ স্থানে পৌঁছেদিয়ে ত্রান বিতরণ করিয়েছেন সব চাইতে বড় আশ্চর্যের বিষয় হলো টেলিভিশন সাংবাদিকেরা অফিসের শিডিউল অনুযায়ী বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠান থাকলেও সেখানকার অনুষ্ঠান কাভারেজ করে আবারও বন্যা এলাকায় পৌছেছেন অক্লান্ত পরিশ্রম এর মাধ্যমে যেন বন্যার পরিস্থিতি মোকাবেলার চ্যালেঞ্জ হিসেব গ্রহণ করার মতোন দেখেছি যেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সংবাদ কর্মীদের নিজ পরিবার। বাংলাদেশের মধ্যে মিডিয়া পাড়ায় সব চেয়ে বেশি কুমিল্লার মানুষ এর মিডিয়া কর্মী ও প্রতিষ্ঠান এর দায়িত্ব পালন করছেন কেহ কেহ আবার একাই একাধিক প্রতিষ্ঠান এর দায়িত্বও পালন করছেন। আলাদা আলাদা কোরাম থাকলেও সকল বেধাবেধ ভুলে সকল মিডিয়া কর্মীরা যেন এক সাথে ঐক্য হয়েই বন্যার মোকাবেল করেছেন।
সবচেয়ে বেশি নজরে ছিলো সাংবাদিকদের বন্যায় অনেক সময় ডাকাতি ঘটনায় নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন গভীর রাতেও কোথায় ডাকাত পরছে কোথায় ত্রান নিয়ে আসা সেচ্ছাসেবী সংগঠন ও অন্যান্যদের উপরে হামলা হয়েছে সেইসব বিষয় সাথে সাথে প্রশাসনকে অবগত করেছেন। তবে বাংলাদেশ পুলিশ কোথাও কোন কর্মকাণ্ড করতে পারছিলেন তার পরেও কুমিল্লার পুলিশ বিভিন্ন বাহিনীর হেল্প নিয়েও এইসব ডাকাতদের নিয়ন্ত্রণে এনেছেন সু-কৌশলে তাদের ভূমিকাও ছিলো দারুণ।
শুধু বন্যার পানি চলে গেছে এখানেই শেষ নয়, পানি নেমে যাওয়ার পর নেমে এসেছে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে দুর্ভোগ, কতো হাজার হাজার পরিবারের সবকিছু একেবারেই বিলিন হয়ে গিয়েছে যার জন্য এখনও গণমাধ্যমকর্মীদের তথ্যের মাধ্যমে মানুষ জানতে পারছে কোন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত বেশি, কোন পরিবারটি একেবারে নিঃস্ব হয়েগিয়েছে, কোথায় গেলে সঠিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি সঠিক ভাবে সাহায্য সহযোগিতা পাবে সব থেকে বেশি কাজ করে যাচ্ছেন গণমাধ্যম কর্মীরা। এখনো যাদের ঘর বাড়ি বিলিন হয়ে গেছে তাদের পাশে দাড়াতেও এখনো মিডিয়াতে বিভিন্ন সংবাদ প্রচার অব্যাহত রেখেছেন ও তাদেরকে সচর করতে সারা দেশের মানুষকে আহ্বান জানাচ্ছেন।
যারা এইসব ভূমিকায় ছিলেন তাদের মধ্যে ছিলেন একাত্তর টিভির জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের বর্তমান সভাপতি এনামুল হক ফারুক, সিনিয়র সাংবাদিক মির্জা ফসিউদ্দিন আহম্মেদ, যমুনা টিভির সাংবাদিক খোকন চৌধুরী, দীপ্ত টিভির সাংবাদিক শাকিল মোল্লা, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির এর কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি তানভীর দিপু, এন টিভির কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি মাহফুজ নান্টু, সময় টিভির কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি ইশতিয়াক আহমেদ, এখন টিভির জেলা প্রতিনিধি খালেদ মাহমুদ, মাসুদুর রহমান মাসুদ, দৈনিক সমাজকন্ঠ সম্পাদক জসীম উদ্দিন চাষি, কুমিল্লা নিউজ এর সম্পাদক, আজকের পত্রিকার প্রতিনিধি জহিরুল হক বাবু, দেশ টিভির জেলা প্রতিনিধি মো সুমন কবির, কুমিল্লা টুয়েন্টি ফোর এর জেলা প্রতিনিধি মো লিপু, আজকের বিজনেস বাংলাদেশ পত্রিকার মহানগর প্রতিনিধি আয়েশা আক্তার, মেক নিউজ এর সম্পাদক প্রকাশক মেক রানা, কুমিল্লার কাগজের প্রতিনিধি সজীব হোসেন, কুমিল্লা পপুলার নিউজ এর সম্পাদক প্রকাশক মো সাফি, সবুজ বাংলার প্রতিনিধি মো শরিফ সুমন, একাত্তর টিভির ক্যামেরা পার্সন মো রনি, এখন টিভির ক্যামেরা পার্সন মো কামরুল হাসান, সোনালী নিউজের কুমিল্লা প্রতিনিধি মো রাফি, আকাশ টিভির সম্পাদক মহিউদ্দিনসহ নাম না-জানা আরো অনেক।
লেখক সিনিয়র সাংবাদিক জুয়েল খন্দকার।