নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে মদনপুর থেকে ধউরপর্যন্ত চলাচলকৃত আসমানী পরিবহনটি ফেরদৌস ভূইয়াঁ রুবেল নামে এক পরিবহন চাদাঁবাজ ও আওয়ামীলীগ নেতা বাহিনী নিয়ে হামলা করে দখল করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় তারা আসমানি পরিবহন পরিচালকদের জিম্মি করে দেড় লাখ টাকা বিকাশের মাধ্যমে আদায় করে নেয়।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকালে মদনপুর আসমানি পরিবহনের ডিপোতে। আসমানী পরিবহনের পরিচালনা কমিটির আহবায়ক মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, ২০১৬ সালে আসমানি পরিবহনটি মদনপুর থেকে তারাব, ডেমরা-ষ্টাফ কোর্য়াটার, রামপুরা, এয়ারপোর্ট, উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর ও ধউর পর্যন্ত চলাচল করছে। শুরুতে এ কমিটির পরিচালনার প্রধান ছিলেন ইলিয়াছ কাঞ্চন নামে আসমানিরই একজন পরিবহন মালিক। পরবর্তীতে তাকে হটিয়ে আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আসমানি পরিবহনের একক নিয়ন্ত্রন নিয়ে বেপরোয়া চাদাঁবাজি শুরু করেন ফেরদৌস ভূইয়াঁ রুবেল। রুবেলের পক্ষে চাদাঁ আদায় করতেন হীরু ও বাশার নামে দুই পরিবহন চাদাঁবাজ। তাদের চাদাঁবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে পরিবহন মালিকরা র্যাব-১১তে অভিযোগ দিলে ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর র্যাব অভিযান চালিয়ে চাদাঁবাজির টাকাসহ হাতেনাতে বাশারকে আটক করে। এসময় হীরু পালিয়ে যায়। র্যাব বাদি হয়ে বাশার ও হীরুর বিরুদ্ধে চাদাঁবাজি মামলা করে। এরপরও থামেনি রুবেলের চাদাঁবাজি।
পরবর্তীতে আসমানি পরিবহন মালিকরা রূবেলের বিরুদ্ধে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতিতে অভিযোগ দিলে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি রূবেলের চাদাঁবাজি সত্যতা পেলে আসমানী পরিবহন পরিচালনার জন্য ২০২৩ সালে মার্চ মাসে সাধারণ মালিকদের পক্ষ থেকে মোঃ রফিকুল ইসলামকে আহবায়ক করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি করে দেয়া হয়। নতুন কমিটি গঠনের ৪দিন পর রুবেল আরেক চাদাঁবাদ মনোয়ার তাদের বাহিনী নিয়ে ডেমরায় ষ্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে আসমানী পরিবহনের মালিক ও শ্রমিকরা তাদের রুখে দেয়। এরপর থেকে আসমানী পরিবহনটি সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করা হচ্ছিল। এ বছরের জুলাই মাসে রুবেল বর্তমান কমিটিকে কোন নোটিশ না করিয়ে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে এক তরফা একটি রায় আনে। এরপর বর্তমান কমিটি আদলতে গিয়ে তাদের কাগজপত্র দাখিল করলে আদালত রুবেলের রায়ের উপর স্থিতাবস্তা জারি করে। আদালতের রায় উপেক্ষা করে আওয়ামীলীগ নেতা ও পরিবহন চাদাঁবাজ রুবেল জুলাই মাসের ৯ তারিখে ডেমরার আওয়ামীলীগ সর্মথিত সাবেক এম, পি সজল মোল্লার লোকজন নিয়ে পুনরায় আসমানী পরিবহন দখলে নিতে চেষ্টা করে।
এসময় প্রতিবাদ করলে বর্তমান কমিটির আহবায়ক মোঃ রফিকুল ইসলাম ও তার লোকজনের উপর হামলা করলে রফিকুল ইসলামসহ আরও ৫ জন আহত হয়। এ ঘটনায় রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে রূবেল ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে ডেমরা থানায় অভিযোগ দিলেও রূবেল আওয়ামীলীগের নেতা হওয়ায় সেই মামলা রুজু হয়নি। আসমানী পরিবহন পুনরায় দখলে নিতে সর্বশেষ গত শুক্রবার বিকালে রুবেল সশস্র বাহিনী নিয়ে পরিবহনটির মদনপুর ডিপোতে হামলা করে দখলে নেয়। এসময় আসমানী পরিবহনের পরিচালনা কমিটির সদস্য মোঃ নিজাম ও মোঃ আকরামকে জিম্মি করে বিকাশের মাধ্যমে নগদ দেড় লাখ টাকা আদায় করে তাদের প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। বর্তমানে রুবেল তার বাহিনী নিয়ে আসমানী পরিবহন দখল করে চাদাঁ আদায় করছে। আর এ কারণে এ পরিবহনটিতে চলছে চরম উত্তেজনা। যেকোন সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী ও প্রাণ নাশের ঘটনা। এ ব্যাপারে রূবেল ও তার বাহিনী বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করে বিষয়টি সেনাবাহিনীকেও অভিহিত করা হয়েছে।