শিরোনাম
আজ দুপুর দুইটায় নিজ আসনে মির্জা ফখরুলের ইলেকশন জার্নি সিলেটে কোম্পানীগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের আত্মপ্রকাশ  জাপানের টোকিওতে ওয়েসকা ইন্টারন্যাশনাল বোর্ড মিটিংয়ে অংশ নিচ্ছেন : অরিত্র রহমান ময়মনসিংহে ১১ দৈনিক পত্রিকায় ‘হুবহু একই সংবাদ থাকায় সবগুলোর ডিক্লারেশন বাতিল ঢাকায় শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে ঠাকুরগাঁওয়ে শিক্ষক সমিতির সংবাদ সম্মেলন ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগন্জে গার্লফ্রেন্ডের মালিকানা নিয়ে ছাত্রদলের দুগ্রুপের সংঘর্ষ,আহত ৯ জন রক্তে রামদা ধুয়ে, জামিনে মুখ মুছে, এখনো ক্ষমতার মঞ্চে সোনা শাহীন চুনারুঘাটে সিলিকা বালু উত্তোলনের সময় ১৪ জন আটক কারিগরি ত্রুটিতে সারজিসের প্রোগ্রামে ৮ মিনিট বিদ্যুৎ ছিল না: নেসকো কর্মকর্তা ক্ষোভ ঝাড়তে সেই উপমা ব্যবহার করা উচিত হয়নি

জেল জরিমানা করেও বন্ধ করা গেল না কুমিল্লা সদরের জালুয়াপড়া গোমতী নদীর বালুর ড্রেজার

Juyel Khandokar

সিনিয়র রিপোর্টার জুয়েল খন্দকার:- বেশ কিছু দিন যাবৎ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে একটি কুচক্র মহল কুমিল্লা সদরের পাঁচথুবী ইউনিয়নের জালুয়া পাড়া এলাকার বর্ডার রোড গোমতী নদী থেকে অবৈধ ভাবে ড্রেজার লাগিয়ে বালু উত্তোলন এর বিষয় সংবাদ প্রকাশের পর গত ০৮ অক্টোবর ২০২৫ইং তারিখ গোমতী নদী থেকে অবৈধ ভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনে দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানজিনা জাহান সেনাবাহিনী সহ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক প্রকৌশলীকে তিন মাসের কারাদণ্ড প্রধান করেন। পরে নদী রক্ষা কমিশন বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করলে ০৯ অক্টোবরে কুমিল্লা ডিসিকে ড্রেজারের বিষয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য একটি চিঠি ইস্যু করেন নদী রক্ষা কমিশন। তবে নদী রক্ষা কমিশনের চিঠির বিষয় এখনো কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি কুমিল্লার প্রশাসন।

সরজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায় আবারও অসাধু চক্র মহলটি উক্ত স্থানে ড্রেজার লাগিয়ে বালু উত্তোলন এর কর্মকাণ্ড চালিয়েই যাচ্ছেন। গত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইং তারিখে উক্ত বিষয় পাঁচথুবী ইউনিয়নের জালুয়া পাড় এলাকার দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ড”র কর্মকর্তা ইমন বড়ুয়ার কাছে জানতে চাইলে, তিনি জানান যে বালু উত্তোলন এর বিষয়ে একটি বৈঠক হয়েছে তবে টেন্ডার হয়েছে কিনা তিনি জানেন না বলে বৈঠক এর চিঠিটি আমাদেরকে দিয়ে দায় সার বক্তব্য প্রধান করেন। কেননা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্ব পদক্ষেপ গ্রহণের করার কথা এই কর্মকর্তার থাকলেও দায়সারা বক্তব্য দিয়ে এ কর্মকর্তা দায় এড়ান।

০৮ অক্টোবর কুমিল্লা সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ম্যাজিস্ট্রেট তানজিনা জাহান ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এজন প্রকৌশলীকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রধান করেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজিনা জাহান এর কাছে উক্ত বালু উত্তোলন এর বিষয়ে কোন টেন্ডার হয়েছে কিনা তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বালু উত্তোলন এর বিষয়ে কোন টেন্ডার হলে আমরা জানতাম। কিন্তু আমাদের এ বিষয় জানা নেই, এছাড়াও অভিযানের সময় তাদের কাছে কাগজ চাইলে তারা কোন বৈধ কাগজ-পত্র দেখাতে পারেনি।

০৮ অক্টোবর প্রশাসন অভিযান দিয়ে জেল জরিমানা করলেও প্রশাসনকে বৃদ্ধা অঙ্গুলি দেখিয়ে ০৯ অক্টোবর থেকে আবারও উক্ত স্থানে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন এর কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছেন অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা। কারা অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করেছেন অনুসন্ধানে উঠে আসে কিছু কুমিল্লা জেলা ও মহানগরের অসংখ্য নেতাদের নাম। তবে একজন আরেক জনের বলে দায় চাপাচ্ছেন। আমরাও অনুসন্ধানে পিছিয়ে নেই, আমাদেরও অনুসন্ধান চলমান সত্যতা খুঁজে বের করতে।

নাম মাত্র একটি বৈঠক এর কাগজ দিয়ে টেন্ডার হয়েছে বলে অবৈধ ভাবে ড্রেজার লাগিয়ে বালু উত্তোলন করেছেন চক্র”টি। সভায় বলা হয়েছিল যে কুমিল্লায় বিভিন্ন স্থানে নদীর বাধ বাধার জন্য বালু উত্তোলন করার বিষয় তবে বালু বাহিরে বিক্রি করা যাবে না ও বালুর প্রতি ফুটে ৩ টাকা করে সরকারি কোষাগারে জমা প্রদাণ করতে হবে। কিন্তু উক্ত টেন্ডার বাস্তবায়ন হয়নি বলে জানা যায়। শুধু মাত্র বৈঠকে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু ড্রেজার রাষ্ট্রীয় আইনে বৈধতা না থাকলেও সেটি ব্যবহার করেই কয়েকদিনে কয়েক কোটি টাকা বালু লুট করা হয়েছে বলে ড্রেজারে কাজ করা এক শ্রমিক জানান।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত সরকার ড্রেজার অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন রাষ্ট্রীয়ভাবে। কারণ ড্রেজার একটা ক্ষতিকর মেশিন যা কিনা যতটুকু মাটি পাবে সব টেনে নিয়ে আসে। এবং এটা মাটির নিচে পাতাল পর্যন্ত মাটি শূন্যতা করার ক্ষমতা রাখে। কখনো সিডরের মত ভয়াবহ কিছু হলে আশেপাশের বাড়ি ঘর সহ জমি নিচের দিক ডেবে যাবে। তাই এটাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এছাড়া গোমতী নদীর বাধ গুলির খুব খারাপ অবস্থায় আছে। পানি বাড়লে বাধ গুলি অনেক ঝুঁকিতে পরবে। ২০২৪ এর ভয়াবহ বন্যায় দেখেছি কেমন ভয়াবহতা রূপ নিয়েছিল। শহরের মানুষ সবাই বাধ বাধার চেষ্টা করে বাধ রক্ষা করেছিলেন। কিন্তু এখন সেইসব বাধ গুলি আরও বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। এখন ড্রেজারে বালু উত্তল করলে বাধ গুলি চরম ঝুঁকিতে পরবে। তবে নদী সংস্কার করা যায়। সেটা ড্রেজার ছাড়া আগে যেমন নৌকা দিয়ে বালু উত্তল করতেন তেমন ভাবে করা যায়। তবে ভয়াবহ ড্রেজার দিয়ে নয়। যদি ড্রেজারেই বালু উত্তল চলতে থাকে তাহলে কুমিল্লার মানুষ তাদেরকে প্রতিহত করা জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা আরও বলেন, স্বৈরাচার সরকার হাসিনার আমলেও এভাবে ভয়াবহ ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে বালু উত্তোলন এর মতন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়নি। তারাও নৌকা দিয়ে বালু উত্তোলন করেছিলেন বলে বিশেষজ্ঞরা জানান।

Leave a Reply